বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ভোটের ময়দান ফাঁকা করতেই ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চলছে

স্টাফ রিপোর্টার : ভোটের ময়দান ফাঁকা করতেই ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একথা বলেন। তিনি বলেন, সারা দেশে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যারা মানুষকে নিরাপত্তা দেবে, সে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। রিজভী বলেছেন, সারা দেশে এখন ভয়ংকর আতঙ্কের নাম পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) কতিপয় কমিশনার।
রিজভী বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের টেক্কা দিয়ে পুলিশই সন্ত্রাসী আক্রমণে প্রাধান্যে থাকছে। ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচার ও সমাবেশে সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার। একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গতকালও ছিল বিএনপি প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর দিন। হামলা করে, গুলী করে বিএনপি প্রার্থীদের রক্তাক্ত করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সেনা মোতায়েনের পর সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২৮টি নির্বাচনী আসনে হামলা হয়েছে। এতে ধানের শীষের ১৯ প্রার্থীসহ আহত হয়েছে শতাধিক। তিনি বলেন, সোমবার ছিলো সবচেয়ে ভালোলেন্ট দিন, সবচাইতে সহিংস দিন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের টেক্কা দিয়ে পুলিশই সন্ত্রাসী আক্রমণে প্রাধান্যে থেকেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচারণা ও সমাবেশে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলার ঘটনা ঘটেছে গতকাল। রাতে অনেক ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, সেনা মোতায়েনের পরও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। যেটা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সাহেব বলেছেন এটা অপ্রত্যাশিত। আমরা সবাই প্রত্যাশা করেছিলাম যে, সেনা বাহিনী মোতায়েনের পর পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হবে। আমরা এখনো বিশ্বাস করি যে, পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং দ্রুত সেনাবাহিনী যেখানে মোতায়েন হয়েছে ওইসব সন্ত্রাসীদের ধরা ও নির্বাচনের শান্তি পরিবেশ সৃষ্টির  জন্য আমি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
রিজভী বলেন, আমাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গতকাল প্রায় ২৮ নির্বাচনী আসনে হামলা হয়েছে। ধানের শীষের ১৯ প্রার্থীসহ আহত শতাধিক। এতদিন পুলিশ লাঠিপেটার পাশাপাশি মাঝে মাঝে গুলী করতো এখন লাঠি বাদ দিয়ে শুধু গুলীই চালাচ্ছে ধানের শীষের প্রার্থী ও কর্ম-সমর্থকদের ওপর।
 সোমবার আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলায় নোয়াখালীতে মওদুদ আহমদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নরসিংদীর আবদুল মঈন খান, ভোলায় মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শরীয়পুরে মিয়া নুরউদ্দিন আহমেদ অপু, কিশোরগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত মেজর আক্তারুজ্জামান, শরীফুল আলম, শেরপুরে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকাসহ বিভিন্ন আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। একাদশ নির্বাচনে দিন যত ঘনিয়ে আসছে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা ততই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট মারতে দলে দলে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
রিজভী গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাদের ওপর হামলার বর্ণনা দেন আজ। তিনি এসব হামলার নিন্দা জানান। কিশোরগঞ্জ, ভোলা, চাঁদপুর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, ঢাকা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, নরসিংদী, ফেনী, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, বরিশাল, টাঙ্গাইল বান্দরবানসহ বিভিন্ন নির্বাচনী আসনে বিরোধীদলের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ভোটে আওয়ামী লীগের পক্ষে মাঠে কাজ করার জন্য ডিসি, এসপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সর্বস্তরের পুলিশ সদস্যদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি অপারেশনাল ইউনিটে নগদ অর্থ পৌঁছানো হয়েছে। বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যদের জন্য ব্যাপক টাকা ছড়ানো হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেলের গাড়িতে বোমা হামলাকারী গুলীবিদ্ধ যুবক খালিদুজ্জামান টিটু (২০) ছাত্রলীগ নেতা। অথচ ঐ ঘটনায় মামলা করা হলো চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ওহিদুল আলম বিশ^াসকে। তাকেসহ অনেক নেতাকর্মীকে ধানের শীষের প্রার্থী শরিফের বাসায় আটকে রাখা হলো। রিজভী বলেন, একাদশ নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা ততই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট মারতে দলে দলে প্রস্ততি নিচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। সাভারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমানুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন প্রতি কেন্দ্রে কেন্দ্রে তার ২০০ জন করে যুবক দরকার। নাটোরে নৌকার প্রার্থী শিমুল ঘোষণা করেছেন যারা নৌকায় ভোট দিবেন তারা কেন্দ্রে আসবেন যারা নৌকায় ভোট দিবেন না তাদের কেন্দ্র আসার দরকার নেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ