বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নারিকেলের আচা পুড়িয়ে স্বাবলম্বী আব্দুল মালেক

খুলনা অফিস : ২৫ বছর ধরে নারিকেলের মালা (আচা) আগুনে পোড়াচ্ছেন। তৈরি করছেন মূল্যবান কয়লা। এ কয়লা দিয়ে সোনা গলানোর কাজ হয় বলে দিনদিন এর চাহিদা বাড়ছে। এ কাজ করে ৮ জনের জীবিকা টিকিয়ে রেখেছেন আব্দুল মালেক খাঁ।
বটিয়াঘাটা হোগলাডাঙ্গার জয়খালি (যুবক) এলাকার আব্দুল মালেক খাঁ। ২৫ বছর ধরে এ কাজ করছেন। তার ৮ জনের পরিবারসহ এ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে আরও প্রায় ৫০টি পরিবার। যারা প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে নারিকেলের আচা কুড়ায়। মাসে ২ বার স্থানীয় ময়লাপোতা নামক স্থানে জড় হয় তারা। আচা বিক্রির জন্য এটিই তাদের স্থানীয় মোকাম। এ মোকামে স্থানীয় দরিদ্র নারীরা প্রত্যেকে প্রায় ৪/৫শ’টি আচা নিয়ে সেখানে আসে। আচা কেজি দরে বিক্রি করে তারা।
 প্রতি কেজি ৮ টাকা দরে। ৬/৭টি আচায় হয় এক কেজি। ময়লাপোতার মোকাম থেকে মাসে ৩/৪ হাজার কেজি আচা সংগ্রহ হয় আব্দুল মালেকের। এ মালা সংগ্রহ করে নিয়ে যায় নিজের চাতালে। সেখানে গিয়ে বাছাইকৃত মালা টাল করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আচার টালে আগুন জ্বলবে পরিমিত। মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে আগুন আনতে হয় নিয়ন্ত্রণে। বেশি আগুন জললে সব আচা পুড়ে কয়লা না হয়ে ছাই হয়ে যাবে। প্রতি মাসে ৩৫/৪০ বস্তা কয়লা তৈরি করেন তিনি। এ কয়লা ফুলতলা, কেশবপুর, সাতক্ষীরা, যশোর, নওয়াপাড়া, বসুন্দিয়া, মণিরামপুর, চুকনগর, পাটকেলঘাটায় বিক্রি করেন। স্বর্ণকাররা এ কয়লার একমাত্র খরিদ্দার। তারা এটি ব্যবহার করে স্বর্ণ গলানোর কাজে।
বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি খুলনা জেলা শাখার সভাপতি নিমাই সরকার জানান, নারিকেলের আচার কয়লায় বেশি তাপ হয়। ছাই হয় কম। ফলে স্বর্ণ কারিগররা এই কয়লা ব্যবহারে বেশি আগ্রহ দেখায়।
আব্দুল মালেক খাঁ জানান, আমি আমার আব্বার কাছ থেকে এ কাজ শিখি। আমার তিন মেয়ে আর তিন ছেলে। চার ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। কিছু জায়গাজমিও কিনেছি। এ কাজের খাটনি অনেক। সারাদিন ধরে খাটতে হয়। কয়লা তৈরি করে আবার পানিতে ধুয়ে ফ্রেশ কয়লা বিক্রির জন্য বস্তায় ভরতে হয়। দিনদিন নারিকেল কমে যাচ্ছে। কিন্তু এ কয়লার চাহিদা বাড়ছে। আমি নিজে কয়লা তৈরি করে নিজের গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ