শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চট্টগ্রাম বন্দরকে বাঁচাতে কর্ণফুলী নদীকে আগের অবয়বে ফিরিয়ে আনার কোন বিকল্প নাই

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দরকে বাঁচাতে কর্ণফুলী নদীকে আগের অবয়বে ফিরিয়ে নিয়ে আনার কোন বিকল্প নাই বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সমস্যা চিহ্নিত করন এবং তা থেকে পরিত্রানের লক্ষ্যে কর্মপন্থা নির্ধারনের জন্য জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
 কর্ণফুলী নদীর অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় জনগণের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে সুজন বলেন, ভারতের মিজোরামের লুসাই পাহড়ে থেকে নেমে এসে সুদীর্ঘ ৩২০ কিলোমিটার পথ বেয়ে কর্ণফুলী নদী মিলেছে বঙ্গোপসাগরে। ১৬১ কিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে কর্ণফুলী নদীর পথচলায় দুই পাশে হাজারো মনমাতানো দৃশ্য চোখে পড়ে। কিন্তু মনোরম সৌন্দর্য্যরে সেই কর্ণফুলী নদী আজ দখলে দূষণে মৃত প্রায়। প্রতিনিয়ত ভরাট হচ্ছে নদী। কমছে নাব্যতা ও প্রশস্ততা। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত হাজার খানেক শিল্প কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত তরল ও কঠিন বর্জ্যে কর্ণফুলী এখন মূলত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র্র, সার কারখানা, ট্যানারি, তেল কারখানা, কাগজকল, সাবান ফ্যাক্টরি, রেওন মিল, রং কারখানা, রাসায়নিক পদার্থ উৎপাদন কেন্দ্র্র এবং টেক্সটাইল মিল থেকে নির্গত বর্জ্য প্রতিনিয়ত দূষণ করছে দেশের অন্যতম প্রধান এ নদীকে। যে নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বন্দর আর যে বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৮০ ভাগ পণ্য ওঠানামা করে। যে নদী বাংলাদেশের হৃদপিন্ড সেই নদীকেই বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও নদীখেকো ব্যাক্তিরা দখল করছে। অথচ আমরা ভুলে যাচ্ছি যে, কর্ণফুলী নদী বাঁচলেই চট্টগ্রাম বাঁচবে। আর চট্টগ্রাম বাঁচলে পুরো বাংলাদেশ বাঁচবে।
 তিনি আরো বলেন, একসময় কর্ণফুলী নদীতে প্রায় ৬৬ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ, ৫৯ প্রজাতির মিশ্র পানির এবং ১৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যেত। এখন মিঠা পানির ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির এবং মিশ্র পানির ১০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত প্রায়। এ ছাড়া আরো ২০ প্রজাতির মাছ হুমকিতে রয়েছে। কর্ণফুলী নদী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মাছের মধ্যে রয়েছে ফাইস্যা, কাঁচকি, রূপচাঁদা, কালিচাঁদা, পাঙাস, বাচা, ভেটকি, পাশা, লইট্যা, রিস্যা, পাবদা, পোয়া, মহাশোল ইত্যাদি। ফলে একদিকে নতুন প্রজন্ম যেমন এসব মাছের স্বাদ পাচ্ছে না অন্যদিকে জনসাধারন আমিষের পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।তিনি উচ্ছেদের পর পুনরায় যাতে আবার কর্ণুূলী নদীকে কেউ দখল করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি বিনীত আহবান জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ