শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ইসরাইলবিরোধী আন্দোলনের অনুপ্রেরণায় মিয়ানমারকে বর্জনের কর্মসূচি

৮ ফেব্রুয়ারি, রয়টার্স : রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্নার্ড কলেজে আয়োজিত সম্মেলনে এক হচ্ছেন বিশ্বের অনেক শিক্ষাবিদ, মানবাধিকারকর্মীসহ জাতিসংঘের আইনজীবীরা। সেখানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে আয়োজকরা অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন ইসরাইলবিরোধী আন্দোলন থেকে। আয়োজকরা বলছেন, তারা বিডিএস আন্দোলনের মতো মিয়ানমারে বিরুদ্ধে বয়কট আন্দোলন শুরু করবেন।

কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ মিয়ানমারে সংঘটিত রোহিঙ্গাবিরোধী নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা স্যাটেলাইট ইমেজ আর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে হত্যা-ধর্ষণ-ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত তুলে আনলেও মিয়ানমার ওই অভিযোগকে ‘অতিকথন’ কিংবা ‘গুজব’ আখ্যায়িত করে তা নাকচ করে আসছে।

সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ জোরালো করতে ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করেছে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন (এফআরসি)। রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট ও রোহিঙ্গাদের কল্যাণে কাজ করা ব্যক্তিদের নিয়ে নেটওয়ার্কটি গঠিত।সংগঠনটির সমন্বয়ক মং জার্নি বলেন, সু চির বেসামরিক সরকার, খুনে সেনাবাহিনী ও বর্ণবাদী সামাজিক সংগঠনগুলো যাদের সরকার বিদ্বেষ, বিভ্রান্ত ও সহিংসতা অস্ত্র বানিয়ছে তাদের আমরা বয়কট করবো। ঠিক যেমনটা করা হয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিডিএস আন্দোলনের মাধ্যমে।  যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার কর্ম জার্নি বলেন, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে যানবাহনের মাধ্যমেও বর্ণবাদ ও রোহিঙ্গা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। খ্রিস্টান ক্যারেন গোষ্ঠী ও কাচিনদের বিরুদ্ধেও একই আচরণ তাদের। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে আমরা তুলে ধরবো যে মিয়ানমারের এসব প্রতিষ্ঠানগুলো সংখ্যালঘু নিপীড়ন খুবই সাধারণ ঘটনা। সেটা রোহিঙ্গা হোক, কাচিন কিংবা বৌদ্ধ রাখাইন।

জার্নি বলেন, এই সম্মেলনে মিয়ানমারে গণহত্যার ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দায়ী করা হবে। তার অভযোগ, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এই সমস্যা সমাধানে কোনও আগ্রহই নেই কারণ এখানে তাদের স্বার্থ জড়িত নয়। তার আশা, এই সম্মেলনের মাধ্যমে সংকট সমাধানে সবাই উদ্বুদ্ধ করা যাবে। রোহিঙ্গারা যুগ যুগ ধরে নিজেদের ব্যবহার করা জায়গা ফিরে পাবে। এছাড়া মিয়ানমারে আটক রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের মুক্তির ব্যাপারেও আহ্বান জানাবে তারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ