শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পাইকগাছায় আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলো ধ্বংসের পথে

খুলনা : পাইকগাছা উপজেলায় সরকার কর্তৃক নির্মিত আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলো ধ্বংসের পথে....

খুলনা অফিস : খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় সরকার কর্তৃক নির্মিত আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলো ধ্বংসের পথে। ভীষণ কষ্টে আছে এ প্রকল্পের মানুষ। এখনকার বাসিন্দারা তাদের আবাসন সমস্যা, বিদ্যুৎ বঞ্চিত, খাবার পানির তীব্র সঙ্কট, শিক্ষার অভাব, ভেঙে পড়া স্যানিটেশন, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে ভুক্তভোগী পরিবার ছিন্নমূল অভাবী মানুষের আশ্রয়স্থলের ঘরগুলো সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কপিলমুনি, গড়ইখালী, চাঁদখালী ইউনিয়নের আশ্রায়ন প্রকল্পের ২৪০টি ঘরে ১৯৯৯-২০০০ সাল থেকে বাসিন্দারা বসবাস করছে। শুরুতেই সরকার তাদের ঘরের দলিল, ঋণদানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসন করে। কিন্তু এখানকার বাসিন্দারা এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বছরের পর বছর এ প্রকল্পের মানুষ নানা সমস্যায় জর্জরিত। অধিকাংশ মানুষ সরকারি সাহায্যের আশায় বসে থাকে। কর্মহীন হয়ে এক পর্যায়ে ব্যারাক ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। আবার কোনো কোনো পরিবার মওসুমভিত্তিক কাজ ইটভাটা, যশোর-গোপালগঞ্জমুখি কৃষিকাজ ও নানা পেশায় জড়িয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে প্রকল্পের বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে।

বয়োবৃদ্ধ শেখ আব্দুল জব্বার বলেন, চাঁদখালীর কপোতাক্ষ নদের তীরে দেবদুয়ার আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা অন্তহীন সমস্যায় রয়েছে। তিনি এখানকার সমস্যা সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

বয়োবৃদ্ধ মহসিন মিস্ত্রি, কাশেম সরদার, হাসনা বানু বলেন, ৮ একর সরকারি জমির ওপর এ প্রকল্পে শুরুতে আর্মির কাজে আমরাও সহযোগিতা করে এ পর্যন্ত বসবাস করছি। সুযোগ-সুবিধার দাবি করে তারা পর্যাপ্ত কার্ড, বয়স্ক ভাতা, ঘরের ছাউনী, রাস্তা মেরামত, পুকুরের ঘাট তৈরিসহ ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ মেরামতের দাবি করেছেন।

বিধবা ফরিদা, হাসিনা বেগমের অভিযোগ স্বামীর মৃত্যুর ১৫ বছরেও বিধবা ভাতার কার্ড জোটেনি। এতিম বাচ্চাদের নিয়ে বসবাস করছি, কেউ কষ্টের কথা শোনে না! বহুবার মেম্বর-চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি কিন্তু টাকা না দিলে কার্ড হয় না বলে তারা এমন অভিযোগ করেন।

প্রকল্প সভাপতি শেখ ইউনুছ আলী জানান, বর্তমানে ঘরগুলো ভেঙে-চুরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, বর্ষা মওসুমে কষ্টের শেষ থাকে না, বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি থৈ থৈ করে, বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত থাকার কথা জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন ও মাসের পর মাস ধরে ধর্ণা দিলেও কাজ হয়নি।

আওয়ামী লীগ নেতা ও গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বিশ্বাস বলেন, আবাসন বা আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর বাজে অবস্থা ও বাসিন্দাদের করুণ বসবাস দাবি করে বলেন, এভাবে চলতে পারে না, এ নিয়ে বহুবার উপজেলা মিটিং-এ তুলেছি এবং ইতোপূর্বে ইউএনও, ডিসি ও সাবেক এমপিরা পরিদর্শন করলেও সমাধান হচ্ছে না।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল আউয়াল আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের উন্নয়নে সরকারি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, ভুক্তভোগীদের আবেদন পেয়েছি এবং তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি প্রেরণের কথা জানান।

আবাসন বা আশ্রায়নের অভাবী মানুষের জন্য খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) এমপি মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে, বহুমাত্রিক উন্নয়নের সাথে সরকারি পদক্ষেপের সাথে তিনি এখানকার বাসিন্দাদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ