শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দইয়ের যতো গুণ

দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে দই খুবই পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু। পুষ্টির আধার দই নিয়মিত খেতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। রাখতে বলেছেন প্রাত্যহিক বা সাপ্তাহিক খাদ্যতালিকায়ও এ দই। কিন্তু এ পুষ্টিকর খাবারটি সবাই যেমন খান না বা খেতে পারেন না, তেমনই দই সম্পর্কে মানুষের অনেক ভ্রান্ত ধারণাও আছে। অনেকে মনে করেন, দই খেলে এসিডিটির সমস্যা হয়, ঠাণ্ডা লাগে কিংবা গলাব্যথা করে, বদহজম হয়। কিন্তু স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা গবেষণায় নিশ্চিত হয়েছেন যে, দই খাওয়া নিয়ে উল্লেখিত ধারণাসমূহের কোনওটাই সঠিক নয়। বরং নিয়মিত দই খেলে মানুষের ঠা-া লাগা, গলাব্যথা, বদহজমসহ অনেক শারীরিক সমস্যা যেমন দূর হতে পারে, তেমনই দেহের প্রচুর পুষ্টিসাধনও হয়। দইয়ে রয়েছে নানাবিধ পৌষ্টিক গুণ। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, প্রোটিন এবং ফ্যাটসমৃদ্ধ হওয়ায় দইয়ের খাদ্যমান অনেক উচ্চ। উল্লেখ্য, দইয়ের এমাইনো এসিড দুধের এমাইনো এসিডের চেয়ে খুব দ্রুত হজম হয়। দইয়ের ল্যাক্টোব্যাসিলাস ব্যাক্টেরিয়া কোলনের ব্যাক্টেরিয়াগুলোকে উদ্দীপ্ত করে। ফলে মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা ডায়রিয়া থেকেও পরিত্রাণ পায়। মিনারেল এবং ভিটামিনসমৃদ্ধ হওয়ায় দই শরীরে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। তাই দই সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো ঝেড়ে ফেলতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন।
হ্যাঁ, দই মানবদেহের জন্য প্রভুত উপকারী দুগ্ধজাত খাবার। অনেকে তা গ্রহণও করেন। কিন্তু পরিমিতি জ্ঞান অনেকেরই নেই। কেউ বেশি বেশি খান। আবার কেউ খানই না। অসুবিধে এখানেই। কেউ প্রতিদিন বারবার খান। কেউ আবার ছ’মাস বা বছরে একবারও খান না। কেউ হঠাৎ পেলে মাত্রা ছাড়াও গেলেন। এতে দই কেন, যেকোনও খাবারে সমস্যা হতে পারে। দুগ্ধজাত ঘি উপকারী বটে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত খেলে কী ঘটতে পারে তা প্রায়ই সবার জানা। কাজেই অতিরিক্ত কোনওকিছুই ভালো নয়। দুগ্ধজাত খাবার দইয়ের বেলাতেও তাই। দই সাধারণত দুই প্রকার। মিষ্টি এবং টক। মিষ্টির চাইতে টক দই বেশি উপকারী বলে বিশেষজ্ঞরা বলেন।
দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য দই প্রস্তুতের প্রণালী আছে। বিশেষত এর প্রস্তুতের সময় স্বাস্থ্যগত বিষয়ে এবং পুষ্টিমান যেন নিশ্চিত থাকে সেদিকে তীক্ষè নজরদারি থাকা খুব জরুরি। আমরা অনেকেই উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকা ফিরবার পথে কিংবা সিলেট-চিটাগাং যেতে বগুড়ার দই বলে রাস্তার রেস্টুরেন্ট বা দোকান থেকে দিব্যি কিনে ফেলি এবং বাসায় কিংবা আত্মীয়বাড়িতে নিই। দইয়ের সঙ্গে মিষ্টিও বাদ থাকে না কখনও সখনও। কিন্তু বগুড়ার দই ও মিষ্টি কতটা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রস্তুত এবং নিরাপদ তা ভেবে দেখি না। দই-মিষ্টি কবেকার তৈরি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ কি না, তাও যাচাইয়ের অবকাশ থাকে না। ফলে এসব দই বা মিষ্টান্ন খেয়ে উপকারের চেয়ে অপকারই হয় বেশি। তাই দইসহ দুগ্ধজাত খাবার মানবদেহের জন্য উপকারী হলেও তা মানসম্মত কি না, তা ভেবেচিন্তে দেখা জরুরি বৈকি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ