শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মোদির হুঙ্কারের জবাবে শান্তির বার্তা ইমরানের

২৫ ফেব্রুয়ারি, টাইমস অব ইন্ডিয়া : ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির হুঙ্কার বা চ্যালেঞ্জের জবাবে গরম কোনো বক্তব্য দেননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বরং শান্তির বার্তা জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ দিন।

প্রথম দিকে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করা হলেও পরে নাম উল্লেখ করেই পাকিস্তানকে লক্ষ্য হুঙ্কার দিতে শুরু করেছিলেন রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে খেলোয়াড়, অভিনেতাসহ সবাই।

এর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের প্রতি আরেক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, ইমরান খান যদি পাঠানের সন্তান হয়ে থাকেন, তাহলে পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানদের পরিবারের সঙ্গে অন্যায় হতে দেবেন না তিনি। তারা যাতে সুবিচার পান সেটা নিশ্চয়ই তিনি দেখবেন। তার এ কথার জবাবে শান্তির বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শান্তি স্থাপনের সুযোগ দিন।

তাছাড়া পুলওয়ামার হামলা সম্পর্কে যদি ভারত পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দিতে পারে তাহলে ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান। কয়েক মাস আগে সে দেশের নির্বাচনে জিতেছেন ইমরান। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর মোদির সঙ্গে কথা হয় তার।

আলোচনার এক জায়গায় মোদি বলেন, আমাদের গরিব মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। এতে সম্মত হয়ে ইমরান জানান তিনি পাঠানের পুত্র। কথা দিলে কথা রাখেন। সেই সূত্র ধরেই ইমরানের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন মোদি। 

শুধু তাই নয় রাজস্থানের একটি সভা থেকে কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সন্ত্রাস মোকাবিলায় গোটা বিশ্ব এক ছাতার তলায় এসে দাঁড়িয়েছে। যারা সন্ত্রাসবাদকে মদত না করে আমরা তাদের শেষ করতে চলেছি। ভারত এখন এক অন্য দেশ। এবারের যন্ত্রণা সহ্য করা হবে না।

এর জবাবে গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর একটি বিবৃতি জারি করে। তাতে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার আগের বক্তব্যে স্থির রয়েছেন। ইমরান খান আবারো বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ দিন। দিল্লি যদি পুলওয়ামার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দেখাতে পারে তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কড়া ব্যবস্থা নেবে ইসলামাবাদ।

গত সপ্তাহেও একই কথা বলেছিল পাকিস্তান। তবে ভারত মনে করছে, বিষয়টিকে দায় এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবেই এ বক্তব্য দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সবাই জানে মাওলানা মাসুদ আজহার পাকিস্তানে থাকে। 

বিভিন্ন মহলে তারা চেষ্টা চালায় পাকিস্তানকে এক ঘরে করার। তাতে সফল না হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য ভারতে পাকিস্তানের বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা বাতিল করে এবং পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্কারোপ করে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরিদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ভারতকে সমুচিত শিক্ষা দেবে পাকিস্তান : ভারত যে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে, তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে একটা টেনশন তৈরি হয়েছে। যুদ্ধের প্রস্তুতি দুই দেশেরই। সেখানে দাঁড়িয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরাইশী। তার মতে, পাকিস্তানকে কাবু করার কোনো ইচ্ছা যদি ভারতের থাকে, তাহলে বিষয়টি তাদের ভুলে যেতে হবে।

রোববার পাকিস্তানকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরাইশী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কোরাইশী জানান, পাকিস্তান একটি শান্তিবাদী দেশ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে চায়। কিন্তু আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারত যে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে, তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

মাহমুদ কোরাইশী বলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে পুরো জাতি এক হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল এমনকি শিশুরাও কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারত যেন এদিকে তাকাবারও দুঃসাহস না করে। পুরো কাশ্মীরজুড়ে এখন ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ভারতীয় বাহিনী নিরীহ নাগরিকদের বিনা অপরাধে গ্রেফতার চালাচ্ছে। কাশ্মীরি জনগণের বাড়িঘরে লুটপাট করছে।

একই সঙ্গে বিজেপিকেও একহাত নিয়েছে কোরাইশী। তার অভিযোগ, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যুদ্ধপরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। যুদ্ধ কোনো ভালো কাজ নয় মন্তব্য করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার জানা আছে বহু সুস্থ চিন্তার বিবেকবান মানুষও ভারতে রয়েছে। ভারত সরকারকে তারা চিন্তাভাবনা করে কাজ করার আহ্বান জানাবেন বলে আমি মনে করি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ