ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ের আহ্বান এরদোগানের
২২ মার্চ, এএফপি : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
গতকাল শুক্রবার ইস্তানবুলে মুসলিম পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে তিনি বলেন, হলোকাস্টের পর ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই হয়েছে, ঠিক সেভাবেই মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, হলোকাস্টের মহাবিপর্যয়ের পর যখন ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিশ্বমানবতা লড়াই করেছে, ঠিক একইভাবে ইসলাম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়া উচিত। এর আগে নিজ ভূখণ্ডের মুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে এক অস্ট্রেলীয় শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীর হামলায় অর্ধশত মুসলমান নিহত হওয়ার পরও দেশটি বলছে- মুসলমানরা এখানে নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে। তুরস্কের ইস্তানবুলে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার এক জরুরি বৈঠকে নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পেটারস বলেন, বিশেষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছি। মুসলমানদের প্রতি সংহতি বার্তার জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রশংসা করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসগলু।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে ইসলামবিদ্বেষী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আমরা এখানে সেটিই দেখাতে চাই। নিউজিল্যান্ডে গতকাল শুক্রবার যখন আজানের ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছিল, তখন ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদের বিপরীত পাশের হ্যাগলি পার্কে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। গত সপ্তাহে এখানকার দুটি মসজিদে খ্রিস্টান বর্ণবাদীদের হামলায় অর্ধশত মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনায় সংহতি প্রকাশ করতে তারা ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। হ্যাগলি পার্কে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ সমবেত হন। যাদের একটি বড় অংশ গত শুক্রবার শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীর এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হয়েছেন। নীরবতা পালন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান। নীরবতা ভাঙার পর তিনি বলেন, পুরো নিউজিল্যান্ড আপনাদের সঙ্গে রয়েছেন, আপনাদের সঙ্গে শোক প্রকাশ করছেন। আমরা সবাই এক।
সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের অধিকাংশ অভিবাসী। পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যারা শান্তির খোঁজে দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
মন্ত্রী ও নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীর ভেতরে অবস্থান করা আরডানের মাথায় কালো পোশাক ও হিজাব পরা ছিল। এমনকি হ্যাগলি পার্কের নারী পুলিশরাও একটি লাল গোলাপসহ কালো হিজাব পরেছিলেন।