বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মঠবাড়িয়া ও বড়াইগ্রামে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩২

মঠবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হোসাইন মোশারেফ সাকু ও রিয়াজুল আলম ঝনো

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলিশাখালী বাজারে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী হোসাইন মোশাররফ সাকু ও হলতা গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল আলম ঝনোসহ ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে শনিবার রাতে মোশাররফ সাকু, রিয়াজুল আলম ঝনো, বাবুল ও মোতালেব তালুকদারকে বরিশাল মেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় নৌকা মার্কার প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী রোববার পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে।
দুপুরে উপজেলা আ’লীগ কার্যালয়ে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র মো. রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গুলিসাখালীতে আ‘লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসাইন মোশারেফ সাকুর (নৌকা) পক্ষে পথসভা শেষে বাজারে দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলছিলেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ঝনো। এসময় সতন্ত্র প্রার্থী (আ’লীগ বিদ্রোহী) মো. রিয়াজ উদ্দিন ও পদত্যাগী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আশরাফুর রহমানের নেতৃত্বে ৫০/৮০ জনের একটি দুর্বৃত্তের দল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম ঝনো সহ বেশ কয়েক জনের ওপর হামলা চালায়। এখবর শুনে আ’লীগ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসাইন মোশারেফ সাকু ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে তাকে ও তার সাথে থাকা ২০ জন নেতা কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। তিনি আরও বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যন প্রার্থীর গণ জোয়ার দেখে  পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান ও তার আপন বড় ভাই উপজেলা আ’লীগ সদস্য বিদ্রোহী প্রার্থী মো.রিয়াজ উদ্দিন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এ হামলা চালায়। এ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অপর দিকে বিকেলে বিদ্রোহী প্রার্থী মো.রিয়াজ উদ্দিনের পৌরশহরের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় সংবাদ সম্মেলন করে তার উপরে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শনিবার রাত ১০টার দিকে রিয়াজুল আলমের নেতৃত্বে গুলিসাখালী বাজারে অবস্থিত আমার (আনারস প্রতীক) নির্বাচনী কার্যালয় ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুর করে এবং হলতা গুলিসাখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাউদ্দিনকে মারধর করার অভিযোগ করেন।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উপজেলার সব স্থানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে ও হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৭জনকে আটক করা হয়েছে।
বড়াইগ্রামে  সংঘর্ষে আহত ১২ 
বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা : নাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষে কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছে। শনিবার রাত নয়টার দিকে বড়াইগ্রাম পৌরসভার জলন্দা চান্দুর মোড়ে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম জোয়াদ্দার, যুবলীগ কর্মী বাঘাইট গ্রামের আশিক, জলন্দা গ্রামের এনামুল হক ও চক বড়াইগ্রামের মিঠুনকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানা যায়, গত ১০ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বিজয়ী হন। এর পর থেকে জলন্দা এলাকায় নৌকার সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলুর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তার জের ধরে শনিবার রাতে জলন্দা চান্দুর মোড়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে রাজ্জাক মোড় এলাকার যুবলীগ নেতা শহীদ (৩৮) ও সাইদুল (৩৬) কে রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া লক্ষীকোল এলাকার যুবলীগ নেতা অপু (২৮), পলাশ (২৬), আশরাফুল (২৭), আখের আলী (৫০) এবং আওয়ামীলীগ কর্মী ধামানিয়াপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন (৪৮), জলন্দা গ্রামের রাকাত আলী (৪৫), ফিরোজ (২৪), শাহজাহান আলী (৪৫) ও নাজমুল হোসেন (২৪) কে নাটোর সদর হাসপাতাল ও বড়াইগ্রাম হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান, রবিবার এ ঘটনায় আটকদের নামে মামলা দিয়ে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিনশ’ রোগীকে বিনামূল্যে চমশা প্রদান
নাটোরের বড়াইগ্রামে ‘চোখ অমূল্য সম্পদ, চোখের যত্ন নিন এবং অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হোন” এই প্রতিপাদ্যে দরিদ্র রোগীদের দিনব্যাপী চক্ষু চিকিৎসা, বিনামূল্য চশমা প্রদান ও লেন্স স্থাপনের জন্য চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার মানবিক সাহায্য সংস্থা আইকেয়ার প্রজেক্ট ও অধ্যাপক এমএ মতিন মেমোরিয়াল বিএনএমবি বেজ চক্ষু হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ বড়াইগ্রাম পৌরসভা চত্ত্বরে যৌথভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। পৌর মেয়র আব্দুল বারেক সরদার এ চক্ষু ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ক্যাম্পে সাত শতাধিক দরিদ্র রোগীকে বিনামূল্যে চোখ পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের মধ্যে সাড়ে তিনশ’ রোগীকে বিনামূল্যে চশমা প্রদান ও ৬৬ জন দরিদ্র রোগীকে ফ্রি অপারেশন ও চোখে লেন্স স্থাপনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ