বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গোলানকে ইসরাইলের হাতে তুলে দেয়ার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই --এরদোগান

 

২৭ মার্চ, আনাদুলো এজেন্সি : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, সিরিয়ার গোলান মালভূমিকে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। মঙ্গলবার ইস্তানবুলে এক নির্বাচনি সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা।

এরদোগান বলেন, ট্রাম্প ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে গোলান মালভূমি নিয়ে একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ইসরাইলের আসন্ন নির্বাচনে নেতানিয়াহুকে বাড়তি সুবিধা দিতেই এটা করা হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, গোলান মালভূমি সম্পূর্ণভাবে সিরিয়ার অংশ। এখন যুক্তরাষ্ট্র এই ভূখ- ইসরাইলকে দিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কিন্তু সেই অধিকার তাদের নেই।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি, রাশিয়া কিংবা চীন কেউই স্বীকৃতি দেয়নি। সাহস নিয়ে সত্য বলা আমাদের দায়িত্ব। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা বিষয়ক দূত মিখাইল বোগডানোভ বলেছেন, গোলান নিয়ে রাশিয়ার অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এ ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য গোলান মালভূমিতে ইসরাইলী দখলদারিত্ব স্বীকার করে না। আমাদের এ সংক্রান্ত অবস্থান পরিবর্তনের কোনও পরিকল্পনা নেই।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গোলান মালভূমিতে ইসরাইলী দখলদারিত্বের পক্ষে ট্রাম্প যে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফ্রান্স এই দখলদারিত্ব স্বীকার করে না।

জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।

গোলান মালভূমিতে ইসরাইলী দখলদারিত্বের স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেছে কানাডা। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেছেন, ইসরাইলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আরও একবার আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করলো। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্ত কখনও ইসরাইলী দখলদারিত্বকে বৈধতা দেবে না।

কাতার সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গোলান মালভূমি থেকে ইসরাইলকে অবশ্যই সরে যেতে হবে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন বলেছেন, অন্য দেশের ভূখণ্ডের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বিদেশি নেতাদের নেই। 

এর আগে ২৫ মার্চ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে দখলকৃত গোলান মালভূমিকে ইসরাইলী ভূখণ্ডের স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এদিন এ সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় সিরীয় ভূখণ্ড গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনও ইসরাইলের এই দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয়নি। তবে দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি থেকে সরে এসে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে গোলান মালভূমির ওপর ইসরাইলী দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেন তিনি। হোয়াইট হাউসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্পের জামাতা ও উপদেষ্টা ইহুদি ধর্মাবলম্বী জ্যারেড কুশনারের উপস্থিতিতে এ সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গোলান মালভূমির কৌশলগত ও নিরাপত্তাজনিত গুরুত্ব রয়েছে। অঞ্চলটিতে ইসরাইলী সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেওয়ার এখনই সময়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ