শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনায় ঠিকাদার হত্যা মামলায় আওয়ামী নেত্রী সাবিহাসহ ৫ জন রিমান্ডে

খুলনা অফিস : খুলনায় ঠিকাদার মিজানুর রহমান বালা হত্যা মামলায় তার ছোট ভাই মরহুম এসএম মেজবাহ হোসেন বুরুজের স্ত্রী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাবিহা খাতুন (৩৫) সহ ৫ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে নিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই বিপ্লব কান্তি দাস শনিবার খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রোববার শুনানী শেষে আদালত সাবিহাকে একদিন এবং বাকি চারজনকে দুইদিন করে রিমা- মঞ্জুর করেন।
­অপর আসামীরা হলো- বুরুজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও আপার যশোর রোডস্থ মো. আনসারের ছেলে সজিব হাসান সাথী (২৭), বুরুজের দেহরক্ষী শেখপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার মোস্তফা সরদার সোনা (৪৫) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আরও দুই কর্মচারী ফয়সাল (২৫) ও শেখপাড়ার হুদা মিয়ার ছেলে মাসুদ (২৫)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই বিপ্লব কান্তি দাস বলেন, উল্লিখিত গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। রোববার শুনানী শেষে আদালত সাবিহাকে একদিন এবং বাকি চারজনকে দুইদিন করে রিমা- মঞ্জুর করেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিহতের স্ত্রী সারা রহমান বাদী হয়ে খুলনা থানায় বালা হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত ৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়। বৃহস্পতিবারই সাবিহা, সাথী ও সোনাকে খুলনা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে ফয়সাল ও মাসুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছোট ভাই এসএম মেজবাহ হোসেন বুরুজের মৃত্যুর পর মিজানুর রহমান বালা তার ঠিকাদারি ও ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এ নিয়ে বুরুজের স্ত্রী সাবিহা খাতুনের সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে সাবিহা খাতুনের পরিকল্পনা ও অর্থে বালাকে হত্যা করা হয়। হত্যায় সজিব হাসান সাথী, মোস্তফা সরদার সোনা, ফয়সাল ও মাসুদসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৫/৬ জন অংশ নেয়।
আরও উল্লেখ করা হয়, ২৭ মার্চ রাত ৯টার দিকে ঠিকাদার মিজানুর রহমান বালা বাসায় ফেরার পথে নগরীর রায়পাড়া রোডস্থ দারুল উলুম মাদরাসার পূর্ব পাশে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তার রিকশার গতিরোধ করে ধারাল ছুরি দিয়ে তার পেটে উপর্যুপোরি আঘাত করে। এ সময় পেছনের রিকশায় বালার বড় ভাইয়ের ছেলে অসীম ও মামার ছেলে রানা শেখ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাদেরও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এক পর্যায়ে তারা বালা’র মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি বালা’র মত হবে বলেও অসীম ও রানাকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এর আগেও ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর মিজানুর রহমান বালা’র ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। দুর্বৃত্তরা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ওই ঘটনার পর থেকেই বালার প্রয়াত ভাই বুরুজের স্ত্রী সাবিহা খাতুন তাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। সাবিহা খাতুনের উচ্ছৃংখল জীবনযাপন এবং অকারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল অর্থ তুলে নেওয়ার প্রতিবাদ করাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় বালার জন্য। যে কারণে পরিকল্পনা করেই হত্যা করা হয় তাকে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দায়েরকৃত এজাহারে এভাবেই ঘটনার নেপথ্য কারণ উল্লেখ করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ