শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চার বছরে বন্ধ হয়েছে ১২০০ পোশাক কারখানা

স্টাফ রিপোর্টার: কমপ্লায়েন্সের মান নিশ্চিত করতে না পারায় গত চার বছরে প্রায় এক হাজার ২০০ কারখানা বন্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসীর। 

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক। মুক্ত আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, বেনজীর আহমেদ, বিজেএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ, পরিচালক মীরান আলী, ইনামুল হক খান, মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন, বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, এইচএনএম’র প্রতিনিধি রজার, বেস্ট সেলার’র সাসটেইন্যাবল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম, ইনডিটেক্স’র মো. রেজাউল করিম ভূইয়্যা ও কামরুল হাসান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি হায়দার আহমদ খান, বাংলাপোশাক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ওসামা তাসীর বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের দাম অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ কম এবং পণ্যের কম দামের কারণে এ খাতের উদ্যোক্তাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের দাম বছরে গড়ে ০ দশমিক ৭৪% হারে কমছে। এর উপর প্রস্তাবিত গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে ৬০%, যা পোশাক খাতের উৎপাদান ব্যয় প্রায় ৯% বাড়াবে বলে দাবি করেন তিনি।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক রফতানিতে আমরা চীনের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতের বৈশ্বিক বাজার ৪৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এ খাতের বৈশ্বিক মোট রফতানির ৬ দশমিক ৫% বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়ে থাকে। ওসামা তাসীর জানান, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ১৮% হয়ে থাকে তৈরি পোশাক খাতে, যার আর্থিক মূল্য ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, এ খাতের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, কমপ্লায়েন্স সম্পর্কিত ব্যয় বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বজারে পোশাক খাতের পণ্যের দাম কমে যাওয়া এবং পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য ক্রেতাদের ক্রমাগত চাপের ফলে বৈশ্বিক বাজারে আমাদের তৈরি পোশাক খাতের বাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক খাতের সব পণ্যের (প্রচলিত ও অপ্রচলিত) জন্য ৫% হারে নগদ প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বিভিন্ন বায়িং হাউজ এবং এজেন্সির মাধ্যমে পণ্য কেনার কারণে আমাদের তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যথোপযুক্ত দাম পাচ্ছে না। ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো যেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য কেনেন, সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিজিএমইএ’র প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 বাণিজ্যমন্ত্রী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্যের যথাযথ মূল্য পাওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। মন্ত্রী বলেন, আমাদের কারখানাগুলো এখন অনেক বেশি কমপ্লায়েন্স এবং ভালো মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করছে।

বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের পোশাক খাতের ইমেজ সংকট রয়েছে। এই ইমেজ গড়ে তুলতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা খুবই জরুরি। তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতকে টেকসই করার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় হ্রাসের জন্য আমাদের সঠিক নীতিমালা গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন, যথাযথ তথ্যউপাত্ত ব্যবহার খুবই জরুরি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ