শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি

খুলনা অফিস : শেষ মুহূর্তে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুর রহমানকে সমর্থন দেয়ায় নতুন মোড় নিয়েছে ভোটের হাওয়ায়। আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সারোয়ারের মূল প্রতিপক্ষ যেখানে আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ। দ্বিধা-বিভক্ত আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিএনপি এ সুযোগটি কাজে লাগাতে চায়। ফলে ভোটের মাঠে লড়াই হবে ত্রিমুখী। খুলনার সর্ববৃহৎ এ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৯২ কেন্দ্রে দুই লাখ ৪১ হাজার ৪৭৬ ভোটারের ভোট আগামী ১৮ জুন।

সূত্র মতে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রার্থী মোস্তফা সারোয়ার, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মরহুম গাজী আব্দুল হাদীর ছেলে গাজী এজাজ (ঘোড়া) এবং বিএনপি সমর্থিত আনারস প্রতীকের মো. মাহবুবুর রহমান। এছাড়া ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মজিবুর রহমান (উড়োজাহাজ) ও বিএনপি নেতা গাজী আব্দুল হালিমের (টিয়াপাখি) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তাছাড়া মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে হাসনা হেনা (ফুটবল) ও মাকসুদা আক্তার রুমার (হাঁস)। স্থানীয় একাধিক সূত্র মতে, চেয়ারম্যান পদ (স্বতন্ত্র) প্রার্থী সাহস ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মাহবুবুর রহমান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান পদে গাজী আব্দুল হালিমকে সমর্থন দিয়েছে (১০ জুন) উপজেলা বিএনপি। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজ বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুর রহমান ও ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী আব্দুল হালিমকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তাদের সমর্থিত প্রার্থী বিজয় লাভ করবেন বলে আশাবাদী তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তাই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সিদ্ধান্তে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন দেয়া হয়েছে।  অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা সারোয়ারের বিরোধীতা করছে দলটির বড় একটি অংশ। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী এজাজের সমর্থনে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও বিভক্ত। ফলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ এখানে আওয়ামী লীগ। গত রাতেও দুই প্রার্থী কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। নৌকা প্রতীকের দাবিতে করা রীটে পরাজয়ের পর ‘দোয়াত কলম’র প্রার্থী শাহনেওয়াজ জোয়ার্দ্দারও ঘোড়া প্রতীকের হয়ে কাজ করছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। দলীয় একাধিক সূত্র মতে, গত সোমবার দিবাগত রাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দল মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগ। প্রতিদিন উপজেলার কোথাও না কোথাও পরস্পর বিরোধ বাধছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হচ্ছে দুইপক্ষই। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টির বলে অভিযোগ তাদের। গত ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপে খুলনার নয়টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেই ভোটগ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল। ওই নেতার বিরোধিতার কারণেই স্থগিত হয় ডুমুরিয়ার নির্বাচন। তবে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোন মস্তব্যই করতে রাজি হননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় (খুলনা-৫) সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। খুলনার উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানান, ভোট কেন্দ্রের আনুষাঙ্গিক সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সময়মতো মাঠে নামবে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি খান আলী মুনসুর (৬০) ইন্তেকাল করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ