শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মুরসির ইন্তিকালে জামায়াতের শোক

মিশরের ইতিহাসে প্রথমবার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মদ মুরসি দেশের একটি আদালতের এজলাসে রহস্যজনকভাবে ইন্তিকাল করার দু:খজনক ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, মিশরের ইতিহাসে প্রথমবার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিশরের সাবেক জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ড: মুহাম্মদ মুরসি দেশের একটি আদালতের এজলাসে রহস্যজনকভাবে ইন্তিকাল করার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। তার রহস্যজনকভাবে ইন্তিকালে আমরা একজন স্বজন হারানোর গভীর বেদনা অনুভব করছি।
গতকাল মঙ্গলবার দেয়া শোকবাণীতে নেতৃদ্বয় বলেন, ড: মুরসির রহস্যজনকভাবে ইন্তিকালে গোটা মুসলিম উম্মাহ গভীরভাবে শোকাভিভুত ও মর্মাহত। মিশরের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ডঃ মুরসিকে ২০১৩ সালে জে: আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি অবৈধভাবে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেন। অন্যায়ভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে প্রায় ৬টি বছর অবৈধভাবে কারাগারে আটক রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। সেই থেকেই মিশরের জনগণ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা-কর্মীদের উপর চলছে হত্যা, জুলুম-নির্যাতন। এছাড়া মুসলিম ব্রাদারহুডের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। জে: সিসি মিশর থেকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও ন্যায়বিচার নির্বাসনে পাঠিয়ে গোটা দেশকে একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছেন। সেখানে কারো জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। জে: সিসি সরকারের চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ড: মুরসি আদালতের এজলাসে রহস্যজনকভাবে ইন্তিকাল করেছেন। এ ঘটনা মিশর সরকারের জুলুম-নির্যাতনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
তারা বলেন, ইসলামী আদর্শ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তার এ আত্মত্যাগ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ ও সকল মুক্তিকামী জনতা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
তারা আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা ড: মুরসির জীবনের সকল নেক আমল কবুল করে তাঁকে শাহাদাতের মর্যাদা দিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান দান করুন। আমরা তার শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, দলীয় সহকর্মী ও মিশরের শোক সন্তপ্ত জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করছি আল্লাহ তাদের এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।
খেলাফত আন্দোলনের শোক
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াযী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন এক যুক্তবিবৃতিতে মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফেজ মুহাম্মদ মুরসির ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন,  প্রেসিডেন্ট মুরসি ছিলেন ইসলামের পক্ষে এক অকুতোভয় বীর সিপাহসালার। ইসলামের শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।  প্রেসিডেন্ট মুরসির ইন্তিকালে বিশ্ব একজন অবিসংবাদিত মুসলিম নেতাকে হারালো। ইসলামের জন্য তাঁর সাহসি ভ’মিকা, অসামান্য ত্যাগ ও কুরবানী বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেও জন্য চীরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নেতৃবৃন্দ শহীদ হাফেজ ড. মুহাম্মদ মুরসির রূহের মাগফেরাত কামনা  ও মহান আল্লাহ তা‘আলার দরবারে জান্নাতে তাঁর উচু মাকাক কামনা ও  তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
জনসেবা আন্দোলনের শোক
বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম ও দলের মহাসচিব ইয়ামিন হুসাইন আজমী এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ইখওয়ানুল মুসলিমীনের জয়কে মেনে নিয়ে মুরসির আদর্শ ও ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে যারা মেনে নিতে পারেনি তারা ইসলাম ও মানবতার শত্রু বলে আমরা মনে করি। ক্ষমতা গ্রহণের দেড় বছরের মাথায় জেনারেল সিসি যালেম স্বৈরাচারের রূপে অবতীর্ণ হয়ে ফ্যাসিবাদ বনাম গণতন্ত্রের পূর্ণ:প্রতিষ্ঠার নামে হিরন্ময় মিসরকে ভষ্মিভূত করেচে। অন্যায়ভাবে স্বাধীনতাকামী ইসলামপ্রিয় মিশরীয় জনগণের কণ্ঠরোধ করে ক্ষমারঅযোগ্য অপরাধ করেছে। বিশ্বের দরবারে আমাদের দাবী : বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের হৃদয়ের নেতা আধুনিক তুরস্কের রূপকার প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান যেভাবে জেনারেল সিসির সাথে কথাবলা ও কূটনৈতিক সকল সম্পর্ক বর্জন করেছে আমরা ওআইসিভুক্ত সকল রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রধানরা যেন মিসর বনাম জেনারেল সিসির সাথে সকল সম্পর্ক বর্জন করে। মুরসী একজন মজলুম শহীদ। তার রক্ত একদিন অবশ্যই কথা বলবে। সেদিন যেন সিসির পাপাচার আমাদেরকে গ্রাস করে না বসে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার ও সরকার প্রধান যেন মিসর বনাম জালেম সিসির সাথে সকল পর্যায়ে কুটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পরিত্যাগ ও বর্জন করে। যালেমকে তার যুলুমের শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে এবং তা বিশ্ববাসীর সম্মুখেই হবে বলে আমরা আশাবাদী। অপেক্ষায় রইলাম সেদিনের।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ