কাশ্মীরের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে সম্মান জানানোর অনুরোধ ইউএনএইচসিআর-এর
৯ জুলাই, এএফপি : মানবাধিকার সংক্রান্ত একটি রিপোর্টের বরাত দিয়ে কাশ্মীরের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সম্মান জানাতে ভারতকে অনুরোধ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংক্রান্ত হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর)।
তবে হাই কমিশনের রিপোর্টকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। দেশটির কূটনীতিকরা এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এবিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র রবীশ কুমার এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ইউএনএইচসিআর সন্ত্রাসবাদকে বৈধতা দিচ্ছে। তারা যে রিপোর্ট দিয়েছে, তা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ড তার বিরোধী।
মানবাধিকার সংক্রান্ত হাই কমিশন ভারতকে বলে, কাশ্মীরের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সম্মান করতে। আন্তর্জাতিক আইনে প্রত্যেকের মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখতে। সেই আইন মেনে চলতে। জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। অথচ দোষীদের কোনো শাস্তি হচ্ছে না।
অভিযোগ করা হয়, পাকিস্তান মদতপুষ্ট আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাকে আদৌ স্বীকারই করা হয়নি। বছরের পর বছর সীমান্তে সন্ত্রাস চালিয়ে আসছে পাকিন্তান। তাতে কত নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে তার কোনো হিসাবই নেই ওই রিপোর্টে। বরং খুব পরিকল্পিতভাবে বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্রের সঙ্গে এমন একটি দেশের তুলনা করা হচ্ছে যে দেশ সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়।
পুরো জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তথাকথিত আজাদ কাশ্মীর এবং গিলগিট বালটিস্তানও ভারতের অংশ। পাকিস্তানকে বহুবার ওইসব এলাকা ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। এই সব মিথ্যা রিপোর্টের মাধ্যমে ভারতীয়দের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত চেষ্টা চলছে। তা কখনোই সফল হবে না। সব মিলিয়ে কাশ্মীর নিয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না।
বছর খানেক আগে কাশ্মীরে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ নিয়ে প্রথম রিপোর্ট পেশ করে ইউএনএইচসিআর। সেখানে ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই এই অঞ্চলের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়।
কাশ্মীরে পাক ভারত দুই পক্ষই দোষী- জাতিসংঘ
কাশ্মীরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশকেই দুষল জাতিসংঘের মানবাধিকার শাখা। এ অঞ্চলে সংঘাতের ঘটনায় সোমবার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ইউএনএইচসিআর)।
গত বছরের জুনে প্রকাশিত ইউএনএইচসিআরের রিপোর্টে ভারত এবং পাকিস্তান- দুই দেশেরই তীব্র সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, ‘দুই দেশই কাশ্মীরের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব দাবি করে।
গত কয়েক দশক ধরে সেখানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো। ভারতের হাত থেকে স্বাধীনতার দাবি করে আসছে তারা। আবার দাবি উঠছে পাকিস্তানের সঙ্গে মিশে যাওয়ারও।’
সোমবার ইউএনএইচসিআর দফতর জানায়, ‘প্রধান ইস্যু সমাধানে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।’ জাতিসংঘের এ রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আগের রিপোর্টটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতারণাপূর্ণ ছিল। নতুন সংস্করণেও সেই ধারাবাহিকতাই বজায় রয়েছে।