শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চার্জশিটে মূল আসামীদের বাদ দেয়ায় সড়ক অবরোধ

গতকাল রোববার সিরডাপ মিলনায়তনে রিতুর উদ্যোগে জার্নালিস্ট ফেলোশিপ সার্টিফিকেট এবং এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি ও এওয়ার্ডপ্রাপ্তরা -সংগ্রাম

গাইবান্ধা ও গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতা : জেলার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যা মামলায় ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চাজর্শিট দাখিল করেছে পুূলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার প্রধান আসামীকে বাদ দেয়ার প্রতিবাদে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে সাঁওতালরা। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।
গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিযর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার জানান, সাঁওতাল পল্লীতে হামলা মামলার তদন্ত শেষে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চাজর্শিট দাখিল করা হয়। ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও সঠিক তদন্ত শেষ করতে সময় লাগে প্রায় আড়াই বছর। সঠিক তদন্ত ও মূল আসামীদের আইনের আওতায় আনতেই চাজর্শিট দাখিলে কিছুটা সময় লেগেছে। এরআগে, মামলাটির তদন্ত কার্যক্রমের পাশপাশি অভিযুক্তদের মধ্যে ২৫ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া লুটপাট হওয়া বেশকিছু মালামালও উদ্ধার করা হয়।
চাজর্শিটে অভিযুক্ত ৯০ আসামীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, মাহিমাগঞ্জ সুগার মিলের (জিএম-অর্থ) নাজমুল হুদা, সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকিল আহম্মেদ বুলবুল, ইউপি সদস্য শাহ আলম ও আইযুব আলী। অভিযুক্ত আসামীদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠালেও তারা সকলেই জামিনে আছেন। সাঁওতালদের দাবি অনুযায়ী সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মূল আসামীদের বাদ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাঁওতাল ও বাঙালিদের এক হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জস্থ রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে। কিন্তু চিনিকল কর্তৃপক্ষ ওইসব জমি লিজ দিলে তাতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়। ফলে ২০১৫ সালে সাঁওতাল ও স্থানীয় কিছু বাঙ্গালি অধিগ্রহণের চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি ফেরত পেতে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায় ২০১৬ সালের ১ জুলাই ওই খামারের কিছু এলাকায় তারা চারটি বড় বসতি স্থাপন করে। পরে একই বছরের ৬ নভেম্বর ওই খামারের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৯ জন পুলিশ সদস্য তীরবিদ্ধ ও চার জন সাঁওতাল গুলীবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিন জন সাঁওতাল মারা যান। পরবর্তীতে পুলিশ এক অভিযানে ওই বসতি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে।
এসব ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু বাদি হয়ে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামী দেখিয়ে মামলা করেন। পরে ২৬ নভেম্বর থোমাস হেমরম বাদি হয়ে সাপমারা ইউপি চেযারম্যান বুলবুল আহম্মেদসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আরেকটি মামলা করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ