শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ

স্টাফ রিপোর্টার: বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে আজ নতুন মুদ্রানীতি। আজ বুধবার নতুন এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়েছে, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের জন্য মুদ্রানীতি (মনিটরিং পলিসি স্টেটমেন্ট) ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্বনর ফজলে কবির।
 কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমেছে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে। এটি সর্বশেষ ঘোষিত মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় পাঁচ শতাংশ কম। যদিও গত ৩০ জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
তারল্য সংকটের কারণে অনেক ব্যাংকের কাছে ঋণ বিতরণ করার মতো টাকা না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, চাহিদা মতো আমানত না পাওয়ায় ব্যাংকগুলো ঋণ বাড়াতে পারছে না।  ব্যাংকগুলোতে এখন অর্থের টানাটানি চলছে বলেও জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, গত জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে মোট ঋণ বিতরণ হয়েছে ১০ লাখ ৯ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। আগের বছরের জুনের শেষে যা ছিল ৯ লাখ ৭ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে বেসরকারি খাতে ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা।
কয়েকটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনের বছর হওয়ায় ব্যাংকগুলো সতর্কতার সঙ্গে ঋণ বিতরণ করেছে। এর সঙ্গে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণ ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ব্যাংকগুলোতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের বছরে ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ের লাগাম টানতে গত বছরের জানুয়ারিতে ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) এবং সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকেই ব্যাংক খাতে তৈরি হয় তারল্যের সংকট।
এই সংকট দূর করার পাশাপাশি ব্যাংক খাতে সুশাসন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্বনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, তারল্য সংকট দূর হলে ঋণ বিতরণ বাড়াতে পারবে ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্বনর।
মূলত, মুদ্রানীতি ঘোষণার মধ্যদিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ঋণ প্রবৃদ্ধির একটি আগাম ধারণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
মুদ্রানীতিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী সুদহার,  বৈদেশিক মুদ্রাবাজারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি প্রাক্কলন করা হয়। সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
সূত্র জানায়, নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ চলতি মুদ্রানীতির চেয়ে বেশ খানিকটা কমিয়ে ধরা হচ্ছে। যদিও তা চলতি মুদ্রানীতির প্রকৃত অর্জনের চেয়ে কিছুটা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে, মুদ্রানীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে এরইমধ্যে দেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী, উপদেষ্টা, গর্বনর, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের মতামত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ