শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টার : পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে এ শুভেচ্ছা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত প্রতি বছর ঈদুল আযহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। স্বার্থপরতা পরিহার করে মানবতার কল্যানে নিজেকে উৎসর্গ করা কোরবানীর মহান শিক্ষা। মানবিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত ঈদুল আযহা হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-ক্রোধকে পরিহার করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিবেদিত হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। কোরবানীর যে মূল শিক্ষা তা ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত করে মানব কল্যানে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ সম্ভব। বিশ্বাসী হিসেবে সে চেষ্টায় নিমগ্ন থাকা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য।
তিনি বলেন, দেশে এক ভয়ংকর নৈরাজ্য চলছে। মানুষের জান, সহায়-সম্পদের কোনো নিরাপত্তা নেই। ঈদের প্রাক্কালে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রকোপে প্রাণহানিসহ অসংখ্য মানুষের অসুস্থতার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভয়াল দুর্দিনে উৎসবের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। দেশের বর্তমান অবস্থায় সকলের পক্ষে ঈদের আনন্দ যথাযথভাবে উপভোগ করা কঠিন হবে। জাতীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সুরক্ষার প্রশ্নে আজীবন আপোষহীন যোদ্ধা ও দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আক্রোশে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি আজ মানুষ হিসেবে সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত। এদিকে চাল, ডাল, লবন, পিঁয়াজ, মরিচসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি দরিদ্র ও কম আয়ের মানুষকে চরম দূর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ আরো বিপন্ন হয়ে পড়েছে। পানি, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যূতের তীব্র সংকট, সড়ক ও মহাসড়কের বেহাল অবস্থা জনজীবনে দূর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এবারে বন্যায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ী, জোত-জমিসহ সহায় সম্পদ বানের পানিতে ভেসে গেছে। এখনও ভেসে যাওয়া বসতবাড়ীর শুণ্য ভিটায় ঠাঁই করতে পারেনি হাজারো মানুষ। তাই আমি বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত ও বানভাসী অসহায় মানুষের দিকে সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে-সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে আক্রান্ত মানুষ ও বন্যাকবলিত উপদ্রুত অসহায় মানুষ যেন ঈদ আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহবান জানাচ্ছি। ঈদের আনন্দকে ভাগ করে নিতে হবে এক কাতারে মিলে।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হওয়াই কোরবানীর মর্মবানী। পশু কোরবানীর পাশাপাশি মনের পশু কোরবানী দিয়ে জীবন-যাপনে শ্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতি হওয়া আমাদের কর্তব্য। কোরবানীর সে শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে মানব কল্যানে নিজেকে উৎসর্গ করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়ে আসছে। শ্রষ্টার প্রতি নি:স্বার্থ আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকি নিদর্শন হিসেবে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা প্রতি বছর পশু কোরবানী দেয়। উৎসব সমাজের সকল ভেদরেখাকে অতিক্রমের মাধ্যমে মানুষকে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে। তাই স্বার্থচিন্তা পরিহার করে মানব কল্যাণ এবং সমাজে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার ও সোহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। আসুন, এই ‘ত্যাগের উৎসবের’ দিনে অবিচারের নির্মম শিকার ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে শামিল হওয়ার অঙ্গীকার করি। ঈদুল আযহা সকলের জীবনকে করে তুলুক আনন্দময়, মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমি এ প্রার্থনা  জানাই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ