শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে -ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ খিলগাঁও থানা পূর্বের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ -সংগ্রাম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, প্রিয় বস্তু কুরবানি করার মাধ্যমে আমাদের অন্তরের কলুষতা দূর করাই ঈদুল আযহার মূল উদ্দেশ্য। ইক্বামাতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানি পেশ করার প্রেরণা মূলত আমরা এখান থেকেই পেয়ে থাকি। তাই ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ, গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, জাতীয় উন্নয়ন-অগ্রগতি ও কাশ্মীর-ফিলিস্তিনসহ বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার কল্যাণে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঈদুল আযহা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের খিলগাঁও পূর্ব থানা আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও খিলগাঁও পূর্ব থানা সেক্রেটারী আশরাফুল আলম ইমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঈদ পুনর্মিলনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য এডভোকেট বাবুল ইসলাম, খিলগাঁও পূর্ব থানার কর্মপরিষদ সদস্য রওশন জামান, এম কে আলম মজুমদার, সাজিদুর রহমান শিবলী, থানা মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা শফিকুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা আমাদের ত্যাগ, কুরবানি ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে প্রকৃত মুমিন হবার শিক্ষা দিয়ে থাকে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম আ. আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে নিজের সর্বপ্রিয় পুত্রকে কোরবানি করার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। হযরত ইব্রাহীমের (আ) কুরবানির বাস্তব শিক্ষা প্রতিফলিত করে আমাদেরকে সকল কিছুর উপর আল্লাহর হুকুম বা বিধান পালনকেই প্রাধান্য দিতে হবে। সমাজ থেকে অন্যায় ও জুলুমের অবসান ঘটিয়ে দ্বীন ইসলামের সুমহান আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্ঠা চালাতে হবে। যুগে যুগে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে জমিনে শাহাদাতের রক্ত ঝরেছে সেখানে ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে। বাংলার এই জমিনে শহীদ নিজামী, শহীদ মুজাহিদ, শহীদ কামরুজ্জামানসহ অসংখ্য শহীদ ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাদের জীবনকে কুরবানি দিয়েছেন। তাই কোন রকম ভয় কিংবা হতাশ না হয়ে আমাদেরকে কুরবানির শিক্ষা ও তাকওয়ার গুণাবলী কাজে লাগিয়ে আদর্শিক আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই আমরা মহান রবের উত্তম বান্দা হিসাবে পরকালে মুক্তি পেতে সক্ষম হবো।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করতে পারেনি। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুষ্টের লালন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের সকল বিভাগ দলীয়করণ করায় জনসাধারণ আজ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ও নানাবিধ হয়রানির শিকার হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকট ও লোকসানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বাড়লেও কৃষক তার পণ্যের নায্য মূল্য পাচ্ছে না। সোনালি আঁশ পাট ধ্বংস হয়ে শেষ, এখন চামড়া শিল্প ধ্বংসের মুখে। সরকার পণ্যের নায্যমূল্য নিশ্চিত করার পরিবর্তে অসৎ ব্যাবসায়ীদের তাবেদারীতে ব্যস্ত। ফলে দেশ এখন তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে সারাদেশে ডেংগুজ্বর মহামারি আকার ধারণ করেছে। হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে পর্যাপ্ত চিকিৎসা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। এমতাবস্থায় দেশ ও জাতির কল্যাণে  জামায়াত কর্মীদের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি ঈদের শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ কাশ্মীরের মুসলমানদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য মুসলিম বিশ্বসহ সকল শান্তিকামী রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজ ভারত সরকার কাশ্মীরের নিরাপরাধ জনগণের অধিকার কেঁড়ে নিয়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। পবিত্র ঈদের দিনেও তারা মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেনি, তাদের ঘরে খাবার নেই ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। আজ পশু কুরবানির পরিবর্তে স্বজনদের হারিয়ে তাদের ঘরে ঘরে শোকের মাতম চলছে। এমতাবস্থায় তিনি কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর ভারতের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ