শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মন্ত্রিসভায় এসএমই নীতিমালা অনুমোদন

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়

স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের সুবিধা বাড়াতে একটি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। জাতীয় শিল্পনীতির আলোকে এ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এতে করে জিডিপিতে এ খাতে অবদান আরও বাড়বে।
গতকাল  সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘এসএমই নীতিমালা-২০১৯’ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, জাতীয় শিল্পনীতির আলোকে এ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এ খাতে প্রায় ৭৮ লাখ অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। জিডিপিতে এ খাতের অবদান হলো প্রায় ২৫ শতাংশ।
শফিউল আলম বলেন, এসএমই’র বাইরে মাইক্রো এবং কুটির শিল্পও যুক্ত করা হয়েছে। মাইক্রো, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মিলে এসএমই। মোটামুটি সারা পৃথিবীতেই এভাবেই এসএমই গণ্য করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ছয়টি উদ্দেশকে সামনে রেখে নীতিমালা করা হচ্ছে। এসএমই উদ্যোক্তাদের অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সুযোগ, বাজারে প্রবেশের সুযোগ, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ, ব্যবসায় সহযোগিতা এবং তথ্যের সুযোগ প্রাপ্তি।
নীতিমালার বাস্তবায়ন কৌশল তুলে ধরে তিনি বলেন, কৌশলগত অর্থায়ন সুবিধা প্রাপ্তিতে এসএমই খাতের সুযোগ বৃদ্ধি করা, এসএমই খাতের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করা, অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, এসএমই ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড চালু করা। এ ফান্ড চালু হলে মটগেজ (বন্ধক) থাকবে না, অর্থপ্রাপ্তি সহজীকরণ হবে। সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের কথাও বলা হয়েছে নীতিমালায়।
এছাড়া নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (স্ট্যার্টআপ) করার ক্ষেত্রে সহায়তা করা, অনলাইন বা ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে স্ট্যার্টআপ প্রক্রিয়া সহজ করার কথা নীতিমালায় বলা হয়েছে বলে জানান সচিব শফিউল আলম।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে নীতিমালায় ই-কমার্স, অনলাইন সাপোর্ট, আউট সোর্সিং ও আইটি ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এসএমইদের সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
নীতিমালায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়ার কথা বলা আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তাদের (নারী) সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ঋণ দেয়া, তহবিল গঠন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ এবং বাজার সংযোগে সুযোগ বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টেকসইয়ের জন্য ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এসএমই তথ্য ভান্ডার তৈরি, পরিবেশ বান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠায় এসএমই’দের উৎসাহিতকরণ, শিল্প বর্জ ব্যবস্থাপনায় এসএমই’দের প্রণোদনা দেয়া, পরিবেশবান্ধব শিল্প প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং ব্যবহার বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
শফিউল আলম বলেন, এসব নীতি-কৌশল বাস্তবায়নের জন্য দুই ধরনের পর্ষদ থাকবে। শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৩৭ জনের পর্ষদে প্রতিমন্ত্রী সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্বনর, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, বেসরকারি খাতের পাঁচজন প্রতিনিধি থাকবেন। আর সচিবের নেতৃত্বে পর্ষদে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২৯ জন সদস্য থাকবেন। এ নীতিমালা ২০১৯-২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কার্যকর করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
 প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে এসএমই উদ্যোক্তারা এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ব্যাংক থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩৬টি অ্যাকটিভিটিজ ও ৬২টি কৌশল আছে। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনায় রয়েছে কী কী অর্জন করতে হবে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে ২০২৫ সালে এসএমই খাতের জিডিপিতে অবদান ৩২ শতাংশে উন্নীত হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ