শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নাগরিক তথ্য নিবন্ধনে ডিএমপির অ্যাপ ॥ সুবিধা মিলবে সবারই

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বাড়ির মালিক, ভাড়াটিয়া ও মেস সদস্যদের তথ্য নিবন্ধনের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (সিআইএমএস) মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে। গতকাল সোমবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঢাকার বিদায়ী পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া অ্যাপটির উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “এখন মোবাইলে অ্যাপটি ডাউনলোড করে যে কেউ তথ্য নিবন্ধন করতে পারবেন। এটা ছাড়াও ম্যানুয়ালিও আমাদের কার্যক্রম চলবে।”
আপাতত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত মোবাইল ফোনে গুগল প্লে-স্টোর থেকে সিআইএমএস অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। শিগগিরই অ্যাপল স্টোরেও মিলবে এই অ্যাপ। নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রথম রমনা থানা থেকে সফটওয়্যারভিত্তিক সিআইএমএস তথ্যভান্ডার উদ্বোধন করেছিলেন আছাদুজ্জামান মিয়া।
গতকাল সোমবার তিনি বলেন, “বর্তমানে ৭২ লাখের বেশি নাগরিকের সিআইএমএস ডেটাবেইজ পুলিশের সংগ্রহে আছে। অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করলে পুলিশের কাজ অনেক কমবে।”
পুলিশ কমিশনার বলেন, গুগল প্লে-স্টোরে সিআইএমএস ডিএমপি লিখে সার্চ দিয়ে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে।“সেখানে নাগরিকের মোবাইল নম্বর দিলে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেই ভেরিফিকেশন কোড দিয়ে লগইন করা যাবে।
নাগরিক তখন তার সমস্ত ডেটা দিয়ে সাবমিট করলে একজন অফিসার ভিউতে ওকে করলে ওই নাগরিকের ডেটা দেখতে পারবেন।”
নাগরিকের দেওয়া তথ্য অসম্পূর্ণ থাকলে তা তার ইমেইল ঠিকানায় তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান আছাদুজ্জামান মিয়া। অ্যাপের পাশাপাশি আগের মতো নির্ধারিত ফরমেও নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলেও জানান তিনি।
 যেভাবে ম্যানুয়াল নিবন্ধন : ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্ধারিত নিবন্ধন ফরম প্রতিটি থানা এবং ফাঁড়িতে পাওয়া যায়। নাগরিকরা সেখান থেকে ফরম নিয়ে সেটি যথাযথভাবে পূরণ করে থানায় জমা দিতে পারেন। জমা দেওয়ার আগে ফরমের ফটোকপি নিজের কাছে রেখে দেওয়া উত্তম।
ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানা এলাকাকে পাঁচ থেকে সাতটি বিটে ভাগ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ডিএমপির ৫০টি থানায় মোট ৩০২টি বিট রয়েছে। নির্দিষ্ট এলাকার একটি করে বিট নম্বর রয়েছে। নির্দিষ্ট বিটের নাগরিকদের অধিকতর পুলিশি সেবা দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই, এএসআইসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। সব বিট কর্মকর্তার একটি সরকারি মোবাইল নম্বর আছে। নাগরিকরা প্রয়োজনে বিট অফিসারের সঙ্গে ওই ফোনে কল করে সেবা নিতে পারেন।
প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে হবে। কোনো নাগরিক ঠিকানা পরিবর্তন করলে সংশ্লিষ্ট থানাকে জানিয়ে নতুন যে থানা এলাকায় বসবাস করবেন, সেই থানায় যোগাযোগ করে নিবন্ধন ফরম পূরণ করতে হবে। কোনো ব্যক্তির কর্মক্ষেত্র অন্য থানা এলাকায় হলে, তিনি যে এলাকায় বসবাস করেন সেই থানায় নিবন্ধন করা উত্তম।
নিবন্ধনে বাড়ি মালিকদের সুবিধা : কোনো অপরাধী ওই বাড়িতে অবস্থান করতে পারবে না। ভাড়াটিয়ার কোনো অপরাধে বাড়িমালিককে হয়রানির শিকার হতে হবে না। বাড়ি মালিক ভাড়াটিয়াকে নিবন্ধনের সকল তথ্য পূরণ করে দিতে বলা মাত্রই অপরাধী হলে ফরম পূরণে গড়িমসি করবে। অপরাধী হলে ফরম পূরণ না করে পরের মাসেই চলে যাবে। কোনো অপরাধী সকল তথ্য লিখিতভাবে পুলিশের নিকট জমা দিয়ে অপরাধ করতে সাহসবোধ করবে না। বাড়ি মালিকের সাথে বিট অফিসারের ব্যক্তিগত যোগাযোগ থাকায় যেকোনো আইনগত বিষয়ে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করা সম্ভব। বাড়ি মালিক তার ভাড়াটিয়ার নিবন্ধন ফরমটি পুলিশের কাছে দিলে অপরাধীদের দায় তার ওপর বর্তাবে না।
নিবন্ধনে ভাড়াটিয়ার সুবিধা : সংশ্লিষ্ট থানার বিট অফিসারের সাথে পরিচিত হওয়া সম্ভব। কোন শত্রুপক্ষ দেশের যেকোনো থানায় মিথ্যা মামলা করলে উক্ত ব্যক্তির ঢাকায় অবস্থান দ্বারা ঘটনাটি মিথ্যা প্রমাণ করা যেতে পারে। বিট অফিসারের সাথে পরিচয় থাকায় গভীর রাতে ঢাকা শহরে চলাফেরায় অহেতুক পুলিশের হয়রানি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম থানায় জমা থাকলে সফওয়ারভিত্তিক ডেটাবেইজ সংরক্ষণ করার ফলে একটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে যে কোনো সময় যেকোনো ব্যক্তির পরিচিতি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। বিট অফিসারের সাথে পরিচয় থাকায় বিভিন্ন সমস্যায় আইনগত সেবা নেওয়া সম্ভব।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ