বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এবার মুজাহিদের স্বীকারোক্তি॥ মোয়াজ শামীম ৫ দিনের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার : আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা বুয়েটছাত্র মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুজাহিদ বুয়েট ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। গত ৬ অক্টোবর আবরার খুন হওয়ার পরপরই যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল, তাদের মধ্যে মুজাহিদ একজন। গতকাল রোববার মুজাহিদকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এ আদালতের পেশকার জাহিদ হাসান বলেন, “মুজাহিদ অপরাধে সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।”
এই হত্যামামলায় এর আগে বুয়েটছাত্র ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন ও অনিক সরকার আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকান্ডে জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে। আর আবরারের বাবা যে ১৯ জনের নামে মামলা করেছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আবরার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত কয়েক দিনে মোট ১৯ জন গ্রেপ্তার করেছে এ মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ।
আসামী মোয়াজ শামীম ৫ দিনের রিমান্ডে
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওয়াহিদুজ্জামান আসামীদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন বলে দুই পক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
আদালতে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শামীমের পক্ষে আইনজীবী ফকির আব্দুল মজিদ ও মোয়াজের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল হোসেন জামিনের আবেদনে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) জামিন বাতিল করে রিমান্ড চান।
শামীমের আইনজীবী বলেন, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। দুর্ভাগ্যক্রমে তাকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাশের রুম থেকে আসার পথে দ্বিতীয় ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। এ মামলায় ঘটনাস্থল থেকে যারা গ্রেপ্তার হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে শামীমের বিরুদ্ধে তারা কিছু বলে নাই। মামলাটির তদন্ত চলছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হয়ে আসুক। এ অবস্থায় শামীমের রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
আইনজীবী কামরুল শুনানিতে বলেন, মোয়াজকে হলের করিডোরে আসা যাওয়ার পথে দেখা গেছে। যে আসামীরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে, তারা কেউ তার নাম বলেনি। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তাকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।
আসামীপক্ষের আইনজীবীদের প্রতি উত্তরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, “রাত আড়াইটার সময় আসামীরা আসা-যাওয়া করছিল। তাদের এত পড়াশোনা! আসলে তারা সেখানে পাহারা দিচ্ছিল।”
উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত আসামীদের কিছু বলার আছে কি না জানতে চাইলেও আসামীরা কোনো কথা বলেননি। এরপর আদালত আসামীদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
সাতক্ষীরা হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় শুক্রবার বিকেলে শামীম বিল্লাহকে এবং শনিবার সকাল ১১টায় মোয়াজকে উত্তরা ১৪ নম্বরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ