শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দেশের দরিদ্র মানুষগুলোকে আরও দরিদ্র করে রাখা হচ্ছে -পরিকল্পনামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, প্রচলিত আইনের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র মানুষগুলোকে প্রতিনিয়ত আরও দরিদ্র করে রাখা হচ্ছে। সবকিছু পরিষ্কার হওয়া সত্ত্বেও কিছু করা যাচ্ছে না।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (বিবিএস) অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনডেক্সেস ইন অ্যাচিভমেন্ট এসডিজিস’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কর্মশালায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রচুর অন্যায় একদম গেড়ে বসে আছে দেশে। অন্যায়গুলো পরিষ্কার, দারিদ্র্যের অন্যায়ের কারণগুলোও পরিষ্কার। হঠাৎ করে তারা দরিদ্র হয়নি। কীভাবে তাদের আমরা আইনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দরিদ্র করছি আরও, সেটাও কিন্তু আমাদের সামনে পরিষ্কার। কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।
উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, গ্রামগঞ্জে খাল-বিল থাকে। সেখানে অল্পকিছু মাছ থাকে। গরিব মানুষগুলো ধরে খায়। সেটাকে পর্যন্ত আমরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে ইজারাদারদের হাতে তুলে দিই। প্রতি বছর ইজারা দিয়ে সামান্য ক’টা টাকা পায় সরকার। অথচ গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোকে আমরা বঞ্চিত করছি, তারা জাল নিয়ে বেরিয়ে দুটো মাছ খেতে পারে না।
আরেকটি উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাড়ির কাছে বন আছে, সেখান থেকে দুটো কাঠ-পাতা আনবে গরিব মানুষগুলো, সেটাও তারা আনতে পারে না। সেখানে বন্দুকধারী ব্যক্তিরা আছে, তারা পাহারা দেয়। এগুলো কী আপনি দূর করবেন না প্রশ্ন রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এ সময় তিনি ৩০ বছর আগের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে আমি যখন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ছিলাম, তখন খাসজমির খতিয়ান দেয়া হতো সবুজ রঙের কাগজে। একটা অনুষ্ঠান করে একটা পরিবারকে ২-৩ বিঘা জমির একটা অধিকার দিয়েছিলাম।
ওই জমি নিয়ে সে চাষবাস করবে। দুই মাস পর খোঁজ নিয়ে জানলাম, সে ওই জমিতে নেই। হয় মার খেয়ে, নয়তো বকশিশ নিয়ে পালিয়ে গেছে। তার পক্ষে ওই জমি হাতে রাখা সম্ভব হয়নি। তার সামাজিক শক্তি নেই, অর্থনৈতিক শক্তি নেই- তাই সে ধরে রাখতে পারছে না। সেটা রাষ্ট্র তাদের সরবরাহ করতে পারছে না। অন্যায়গুলো দূর না হওয়া পর্যন্ত দরিদ্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে একটি গণমাধ্যম। বিবিএসের জরিপ/গবেষণা সচিবের ঘন ঘন বিদেশ সফরসহ ধারাবাহিক প্রতিবেদন করছে সংবাদপত্রটি। এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, সচিব এখানে উপস্থিত আছেন। অনেক তথ্য বেরিয়েছে কাগজের প্রথম পাতায়। যে বিষয়গুলো আসছে, সেগুলো আমার ঘরেও আছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন। এগুলোকে উড়িয়ে দেয়ার বিষয় নয়। আবার এমন কিছু আছে, দৃশ্যত সঠিক নয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ