শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ড্রাগন ফল চাষে সফলতা পেয়েছেন সীতাকুণ্ডের যুবক সাবের শাহ্ ইমন

সীতাকুণ্ডে ড্রাগন ফল চাষে সফল যুবক ইমন -ছবি : জাহাঙ্গীর

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে : দেশি ফল চাষের পাশাপাশি ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সীতাকুণ্ড ভাটিয়ারী খাদেমপাড়া গ্রামের সাবের শাহ্ ইমন। চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে তিনি দুই লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন, বাগানে রয়েছে আরও কমপক্ষে এক থেকে দুই লাখ টাকার ফল।
স্থানীয় মামুনুর রশীদ জানান, ভাটিয়ারী খাদেমপাড়ার মোঃ সাবের শাহ্ ইমন শিক্ষিত যুবক। চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন এই যুবক পাহাড়ের তলদেশে ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে তুলেন। অপরূপ সুন্দর লগানো গাছে এখন কাঁচা-পাকা ড্রাগন ফলের সমারোহ। রসে ভরা টসটসে ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও অনেক মজাদার।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার কৃষি অফিসারদের সহায়তায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২০ শতক জায়গায় ৬০ টাকা দরে ৫২০টি ড্রাগন গাছের চারা রোপণ করেন মোঃ সাবের শাহ্ ইমন। ড্রাগন ফলের চাষ কিছুটা বৈচিত্র্যময়। নির্দিষ্ট দূরত্বে একটি করে পাকা সিমেন্টের খুঁটি গেড়ে তার উপর রিকসা ও সাইকেলের পরিত্যক্ত টায়ার ব্যবহার করা হয়। খুঁটির চারপাশে ৪টি করে ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়। ড্রাগন গাছের লতা বড় হলে খুঁটি বেয়ে টায়ারের ভেতর থেকে বাইরে ঝুলে পড়ে। সঠিক পরিচর্যা হলে চারা লাগানোর ২ বছর পরই গাছে ফল আসতে শুরু করে।
একটি ড্রাগন গাছ অন্তত ২০ বছর ফল দিয়ে থাকে।এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭ মাসে ড্রাগন গাছে ৫ থেকে ৬ বার ফলন আসে। তিনি আরও জানান ড্রাগন ফল স্থানীয়ভাবে তেমন একটা বিক্রি না হলে চট্টগ্রাম শহরে তিনি প্রতিকেজি ২৮০টাকা করে বিক্রি করেন। আর খুচরা বাজারে প্রায় ৪০০টাকা বিক্রি হয়। বেশীর ভাগ ক্রেতা সেনাবাহিনীর সদস্যরা বলে জানান তিনি। তবে তিনি জানান এই ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের জন্য ড্রাগন ফলটি কাজ করে।
চলতি মৌসুমের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন বার ফল বিক্রি করে দুই লাখ টাকার মত আয় করেছেন ব্যবসায়ী সাবের শাহ্ ইমন। এখনো আরো ২লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন তার বাগান দেখতে আসেন। কৃষকরা এসে প্রশিক্ষণও নেন তার কাছে। অনেক সময় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার লোকজনও আসেন তার বাগান কৌশল জানতে।
তিনি জানান, লোকজনকে বিনামূল্যে দেশি-বিদেশি ফলজ চারা বিতরণের মাধ্যমে চাষাবাদে উৎসাহিত করছেন তিনি। ড্রাগন ফলের চারা গুলো ড্রাগন গাছের পাতা থেকেই জন্মে বলে এটার চারা খুব সহজ লভ্য হয়।
শুধু সীতাকুন্ড নয়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক উৎসাহী লোকজন আসেন তার বাগানে। গত চার বছরে দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েকশোর বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সাবের শাহ্ ইমন। তিনি জানান  পড়া লেখা শেষ করে বেকার বসে না থেকে শিক্ষিত যুবকরা আমার মত বিভিন্ন প্রজাতীর ফর চাষে এগিয়ে আসলে আমরা আরও স্বাবলম্বী  হতে পারব।
সীতাকুণ্ড কৃষি অফিসের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র নাথ জানান সীতাকুণ্ডে ড্রাগন ফল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করছি এ ব্যাপারে। বিশেষ করে ইমনকে আমরা শুরু থেকে কারিগরি সহযোগীতাসহ সকল প্রকার সহযোগীতা করেছি । যার ফলে তিনি আজ সফল হয়েছে। উপজেলায় আরও ৪/৫জন ড্রাগন বাগান করছে। তবে অনেকেই সখের বসেও বাড়িতে ড্রাগন ফল রোপন করছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ