ঢাকা, মঙ্গলবার 16 April 2024, ০৩ বৈশাখ ১৪৩০, ৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

রুম্পার বয়ফ্রেন্ড গোয়েন্দা হেফাজতে

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে তার সাবেক প্রেমিক সৈকতকে হেফাজতে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।রুম্পা হত্যার দুদিন পর শনিবার (৭ ডিসেম্বর) আনুমানিক রাত পৌনে নটায় তাকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগ) ওবাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ হেফাজতে নেওয়া ব্যক্তির নাম সৈকত। তিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা অফিসে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি দক্ষিণ বিভাগ) উপ-কমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে আটক করা হয়নি। রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।

রুম্পার সহপাঠী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, রুম্পার বয়ফ্রেন্ড সৈকতের কথা। হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার বিষয়ে অনেকে সৈকতের দিকে আঙুল তুলছেন। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুম্পাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গতকাল শুক্রবার ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠে। শুক্রবার বন্ধের দিনেও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে জড়ো হন সহপাঠীরা। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন সহপাঠীসহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধেশ্বরী শাখার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে যান। সেখানে মানববন্ধন করেন। বিক্ষোভ

থেকে আজ শনিবার ফের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কমসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন শিক্ষকরাও। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রুম্পা আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে আমরা জানতে চাই। হত্যা করা হলে বিচারের নিশ্চয়তা চাই।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ সদরের বিজয়নগরে গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে রুম্পাকে দাফন করা হয়।

হবিগঞ্জে কর্মরত রুম্পার বাবা ইন্সপেক্টর রোকনউদ্দিন বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে রুম্পাকে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু এভাবে তার মৃত্যু হবে আমি ভাবতে পারিনি। নুসরাত হত্যার মামলার মতো দ্রুত বিচার দাবি করেন তিনি। রুম্পার চাচা নজরুল ইসলাম বলেন, রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে। রুম্পা পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করত। মা-ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন শান্তিবাগের একটি ফ্ল্যাটে। বাসা থেকে ৪-৫ মিনিট দূরত্বের একটি ফ্ল্যাটে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতেন। বুধবার বিকালে বাসা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে যান।

সন্ধ্যায় বাসার নিচে গিয়ে রুম্পা তার মাকে ফোনে বলেন, চাচাতো ভাইকে দিয়ে বাসার নিচে একজোড়া স্যান্ডেল পাঠাতে। ১০ বছরের চাচাতো ভাই একজোড়া স্যান্ডেল নিয়ে নিচে নামে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, আংটি, কানের দুল, হাতঘড়ি, হিল জুতা ও টাকাসহ ব্যাগ চাচাতো ভাইয়ের কাছে দিয়ে বলেন, ‘আম্মুকে বলিস আপু একটু পরে বাসায় ফিরবে।’ রাতে আর বাসায় ফিরে আসেননি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি। বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে রুম্পার মা-সহ স্বজনরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে রুম্পাকে শনাক্ত করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে রুম্পার লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ পড়ে ছিল দুটি ভবনের পেছনে এবং একটি ভবনের সামনের গলিতে। তিনটি ভবনের যে কোনো একটি থেকে তাকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ তাদের জানিয়েছে।

ডিএস/এএইচ

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ