বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪
Online Edition

‘বেওয়ারিশ কুকুর ও অসহায় মানুষ’

আখতার হামিদ খান
পাড়ায় পাড়ায় বেড়ে গেছে কুকুরের উৎপাত; বিশেষ করে রাতে। ঢাকা শহরের অলিগলি রাত-বিরাতে কুকুরের দখলে। সিটি করপোরেশনের কুকুর নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও বাস্তবে তার কোনো প্রয়োগ নেই। কুকুর কামড়ালে সরকারি ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়ার কথা থাকলে, সেটি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। খোলাবাজারে উচ্চমূল্যে ওষুধ বিক্রি হয়। এদিকে কুকুর নিয়ে এনজিওবাজিও জমে উঠেছে বেশ। যাদের মূলবাণী- কুকুর মেরো না। পেট ক্লিনিকের ব্যবসাও জমজমাট। সিটি করপোরেশনের গাফিলতি, বিদেশী ফান্ডে চলা দেশী এনজিওর কুকুর অধিকারবিষয়ক ‘কর্মকান্ড’ এবং জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের ব্যবসা- এ তিনের মাঝে পড়ে সাধারণ মানুষ আছে বিপাকে।

গল্প নয় সত্যি : রফিক একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অফিস শেষে বাসায় ফিরতে প্রায়ই রাত হয়ে যায়। বাসা গলির ভেতর, মনিপুর। কাজীপাড়া থেকে তিনি রিকশা না পেলে হেঁটেই পথটুকু যেতে যান। কিন্তু একটা ভয় তাড়া করে। কিছুদূর যেতে না যেতেই পথ আগলে দাঁড়ায় আর চিৎকার করে একটি চিরচেনা প্রাণী- কুকুর। রফিক জানান, এতবেশি চিৎকার-চেঁচামেচি করে যে ভয়ে আর এক পা এগানোর মতো অবস্থা থাকে না। পাড়ার অলি-গলিতে এসব কুকুর ঘুরতে থাকে রাত হলে। কোত্থেকে এত কুকুর আসে সেটা জানা নেই তার। তবে তিনি এ প্রাণীটির উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে চান। রফিকের সূত্র ধরে মিরপুর-ইব্রাহিমপুর ঘুরে দেখা গেল, দিনেই রাস্তাঘাটের যত্রতত্র ঘুরছে কুকুর। প্রায় প্রতিটি গলিতেই রয়েছে একাধিক কুকুর। এছাড়া ফার্মগেট, তেজকুনিপাড়া ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেল। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুকুরের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। দিনে কম দেখা গেলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার মাঝে কোত্থেকে যে এত কুকুর এসে হাজির হয়, সেটা বলা মুশকিল। বেশিরভাগ কুকুরই বেওয়ারিশ। তবে এর সাথে কারও কারও পোষা কুকুরও রয়েছে।

বেওয়ারিশ কুকুরগুলো রাতে ঘেউ ঘেউ শব্দে পাড়া মাথায় তোলে। রাতে কেউ পাড়ায় পথ চলতে গেলে কয়েকটি কুকুর এসে পথ আগলে রাখবে। নতুন কেউ এলে তো ভয়ে অস্থির হয়ে যায়। কেবল যে পায়ে হাঁটা পথিক কুকুরের আক্রমণের শিকার, তা নয়। মোটরবাইক আরোহীর ওপরও কুকুর চড়াও হয়। একমাত্র নিরাপদ বাহন প্রাইভেটকার কিংবা রিকশা। মিরপুর এলাকায় এক সহকর্মীর বাসায় মাঝে মাঝে যেতে হয় সংবাদ কর্মী নাসেরকে। তিনিও জানান, কয়েকদিন আগের এক ঘটনা। তার মোটরবাইককে ঘিরে কয়েকটি কুকুর চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করল। তিনি মোটরবাইট চালিয়ে আসতে পারছিলেন না। কিছুদূর এগোতে না এগুলোত আরও এক সাইকেল চালাককে দেখতে পান, যার চারদিকে কয়েকটি কুকুর ঘিরে রেখেছে। একই অভিযোগ ফার্মগেটের তেজকুনিয়াপাড়ার বাসিন্দা কালামের। তিনি জানান, কয়েক মাস আগে তার ছোট ছেলেকে একটা কুকুর কামড় দেয়। এক ধরনের উদ্বিগ্নতার মাঝে চিকিৎসা করতে হয়েছে। চিকিৎসার জন্য কোথায় যাবেন তিনি জানতেন না। শহরে কুকুর থাকবে, কিন্তু এত বেশি পরিমাণের কুকুর বেড়ে গেছে রীতিমতো উৎপাত মনে হচ্ছে। বিকাল হলেই পাড়ার অলি-গলিতে কুকুরের জটলা দেখা যায়। তার মতে, এদের মধ্যে হয়তো পাগলা কুকুরও আছে। যেগুলোর কামড়ে জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছেলেমেয়েরা ভয়ে গলিতে খেলা করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশন চাইলে কুকুর বিড়ালের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু তার জানা মতে, কোনো দিন সিটি করপোরেশনের লোক এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা জানা নেই।

যদি কুকুর আপনাকে কামড়ায় : ধরুন কুকুর আপনাকে কামড় দিল। ধারাবাহিক যন্ত্রণার শুরু সেখান থেকেই। কুকুরটি পাগলা কুকুর না নিরীহ সেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে জানা না-ও থাকতে পারে। কাজেই ভয়াবহ জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে ভ্যাকসিন নিতেই হবে। বাঘে ছুলে আঠারো ঘা, কিন্তু কুকুর ছুঁলে নাড়ির চারদিকে ১৪টি ইনজেকশন। এখন অবশ্য ১৪টি ইনজেকশন নিতে হয না, যন্ত্রণাটা যায় টাকার উপর দিয়ে। বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহের কথা থাকলেও ভুক্তভোগীরা বলেন, অন্য কথা। তাদের খোলা বাজার থেকে সেই ভ্যাকসিন কিনতে হয়। সেটার দাম ক্ষেত্র বিশেষে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা। যারা সেটা করতে পারেন না, তাদের নির্ভর করতে হয় ঝাড়ফুঁক এবং টোটকার উপরে। সেটা ঘোরতর বিপদ ডেকে আনে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিকিৎসক ছাত্র জানান, সাধারণত গ্রামাঞ্চলে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিনের উচ্চমূল্যের কারণে কুকুরের ভ্যাকসিন গ্রহণ না করে টোটকা চিকিৎসা যেমন- পানি পড়া, চিনি পড়া, বাটি চালান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে থাকে। যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকায় আক্রান্ত ঐসব লোক শেষ মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় আক্রান্ত রোগীর বাঁচার আর কোনো উপায় থাকে না।

যেমন কুকুর তেমন লালা : না, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হবার জন্য কুকুরের কামড় লাগবে না। কোনোভাবে কুকুরের লালার সংস্পর্শে এলেই হলো, এমনকি কুকুর কামড়াচ্ছে এমন কোনো পশুর মাংস খেলেও আপনার জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। জলাতঙ্ক রোগ এতটাই ভয়াবহ যে আক্রান্ত ব্যক্তি বা পশুর লালর সংস্পর্শে যেই আসবে রোগটি তার মাঝেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায় জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ রাখা উচিত বলে তিনি মনে করেন। বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির তৈরি জলাতঙ্ক রোগের যে ভ্যাকসিন পাওয়া যায় তা বেশ উচ্চমূল্যের। আবার উচ্চমূল্যের কারণে এ ভ্যাকসিন সব ওষুধের দোকানে পাওয়া যায় না।

সিটি করপোরেশন যা বলে : ঢাকা সিটি করপোরেশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কুকুর নিধনের জন্য তাদের বিশেষ একটা দল আছে। প্রতিটি দলেই রয়েছে তিনজন করে সদস্য। এক ধরনের ক্যাচার দিয়ে কুকুর ধরে ম্যাগনেসিয়াম সালফেট প্রয়োগ করে কুকুর মেরে ফেলা হয়। আবার এলাকার কেউ কুকুর মেরে দিলে সিটি করপোরেশন থেকে টাকা দেয়া হয়। কিন্তু এসবই কেতাবের কথা, বাস্তবের চিত্র অন্যরকম। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবেশবাদী কর্মী জানান, সিটি করপোরেশন কুকুর মারার জন্য ঠিকই টাকা ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। ডিসিসির কর্মকর্তারা জানান, তাদের আরও লোকবল চাই। গাড়ি চাই, বাজেট বরাদ্দ চাই। এখন যা আছে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। অন্যের গাড়ি নিয়ে তবেই যেতে হয় অভিযানে।

কুকুরসংক্রান্ত আইন কেতাবে আছে, বাস্তবে নেই : ডিসিসির নিয়মানুযায়ী কুকুর পোষার জন্য সিটি করপোরেশনের একটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিতে হয়। সেক্ষেত্রে ১০০ টাকা জমা নিয়ে কার্ড নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে প্রাণীর গলায় একটি কলীর বা টোকেন দেয়া হয়। এর পর ভ্যাকসিন নিতে হয় বাইরের কোনো ওষুধের দোকানা থেকে। এ ভ্যাকসিন নেয়া কুকুর আপনাকে কোনো কারণে কামড়ালেও আপনি নিরাপদ। এটাই হচ্ছে সভ্য নাগরিক সমাজের নিয়ম। প্রশ্ন হচ্ছে, গলায় কার্ড ঝোলানো কয়টি কুকুর আপনার চোখে পড়েছে? যেসব কুকুর আমাদের প্রতিনিয়ত বিবান্ন করছে, তারা সবাই বেওয়ারিশ। না আছে তাদের ভ্যাকসিন নেয়া, কাজেই তারা বিপদজ্জনক। বেওয়ারিশ কুকুরের ক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেনÑ জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের একজন জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন তাদের নিয়মানুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অভিযান চালিয়ে মেরে ফেলে।

এছাড়া কেউ অভিযোগ করলে সেই এলাকায় তাদের লোক গিয়ে কুকুর নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু কুকুর নিধনের পদ্ধতি পুরনো ও সেকেলে হওয়ায় এখন তারাও এভাবে কুকুর নিধনের পক্ষে নয়। আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে কুকুরের বন্ধাত্বকরণ করলেই কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে তারাও মনে করেন। সেক্ষেত্রে প্রতিটি কুকুর বন্ধাত্বকরণ ব্যয় ভ্যাকসিন বাবদ ১০০ টাকাসহ মোট ৫০০ টাকা লাগে। ডিসিসির সেই কর্মকর্তা বলেন, এনজিও কর্মীরা চায় সিটি করপোরেশনকে এ কাজটা না দিয়ে তারাই করবে। কারণ তাহলে বাইরের ফান্ড তারা পাবে।

প্রতিদিন ২০০ মানুষ ॥ আসল মানুষ কত?
ডিসিসির সূত্র মতে, শুধু কুকুরের কারণে মানুষের যে জলাতঙ্ক হয় তা নয়, প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার গবাদিপশুও মারা যায় জলাতঙ্কের কারণে। মানুষের ভ্যাকসিন নেয়ার পদ্ধতি থাকলেও গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেয়ার কোনো উপায় নেই, আর দেশে জলাতঙ্ক রোগের বিষয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। শুধু ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ মানুষ এ রোগের চিকিৎসা নিতে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আসে। তাহলে সারা দেশে দৈনিক কতজন আক্রান্ত হচ্ছে?

মৃতদের শতকরা ৬৫ ভাগই শিশু : সরকারি তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০১৩ সালে প্রায় ১ লাখ লোককে কুকুর কামড় দেয়। তার মধ্যে ২ হাজার জন মারা যায জলাতঙ্ক রোগে। মৃতদের মাঝে শতকরা ৬৫ জন শিশু রয়েছে। যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। ২০১২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) একটি জরিপে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মারা যায় জলাতঙ্ক রোগের কারণে। যার মধ্যে শতকরা ৬৫ জন মারা যায় কেবল কুকুর কামড়ানোর ফলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর পৃথিবীতে ৫৫ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যায়। অর্থাৎ প্রতি ১০ মিনিটে একজন মানুষ এ রোগে মারা যাচ্ছে। শুধু ভারতেই প্রতি বছর জলাতঙ্ক রোগে মারা যায় ১৯ হাজার জন। এ রোগে সাধারণত ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু বেশি আক্রান্ত হয় এবং এর শতকরা ৯০ ভাগ কুকুরের কারণে আক্রান্ত হয়। এক্ষেত্রে একটি সফল ঘটনা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের জয়পুরে এবিসি (Animal Birth Controll) পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে জলাতঙ্ক নির্মূলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কুকুরকে ভ্যাকসিনেশন দিলে সে কুকুর কাউকে কামড় দিলেও জলাতঙ্ক হবে না। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ভারতের জয়পুরে জলাতঙ্ক রোগে মৃত্যুর হার কমিয়ে ৫০০ জনে নেমে আসে ২০১২ সালে এবং শূন্যের কোটায় নেমে আসে ২০১৩ সালে।

প্রাণী অধিকার সংস্থার বাণী : কুকুর মানুষের জীবন যতই বিপন্ন করুক না কেন, সেটা দেখার কেউ নেই। কিন্তু কুকুরের অধিকার রক্ষায় দেশে একটা এনজিও রয়েছে। কুকুরের সার্বিক অধিকারের ব্যাপারে যারা দারুণ সচেতন এমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম অভয়ারণ্য। এ প্রতিষ্ঠানের মতে, আমাদের দেশে পাঠ্যপুস্তকে প্রাণীদের প্রতি মানুষের আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত হলে শিশুরা শিখবে কী করে প্রাণীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা যায়। কুকুর তো সমাজেরই একটা অংশ। তবে আধিক্য কাম্য নয়। দেশে কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালুর জন্য কিছুদিন আগে ঢাকায় কুকুর জরিপও করে তারা। অভয়ারণ্যের তথ্য মতে, দেশে কুকুর আধিক্যের কারণে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কুকুর নিধন, কুকুর নিধন মানে পরিবেশের বিপর্যয়। উন্নত বিশ্বে কুকুরকে নির্দয়ভাবে মেরে ফেলা যায় না। বৈজ্ঞানিক উপায়ে কুকুর বন্ধাত্বকরণ করে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তাদের মতে, কুকুর নিধন না করে জলাতঙ্ক নির্মূলে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করাই ফলপ্রসূ। ফলে কিছুদিন আগে থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ স্থানীয় সরকার এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে জলাতঙ্ক নির্মূল কার্যক্রম শুরু করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে নির্বিচারে কুকুর নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং কুকুরের বংশ দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এছাড়া কুকুর নিধন অমানবিক এবং বিশ্বব্যাপী প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণ নীতিবিরোধী। মানুষ এবং সামাজিক যেসব প্রাণী আছে তার মধ্যে একসঙ্গে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সম্ভব নয়।

মানুষ তাহলে যাবে কোথায় : সবশেষে এনজিও আর ডিসিসি যাই বলুক, সাধারণ মানুষ চায় স্বস্তি। কী করে তারা আতঙ্কমুক্ত থাকতে পারবে সেটাই চাওয়া। শহরে এতসব সমস্যার মাঝে নতুন করে আরেকটি শঙ্কা কারও কাম্য নয়। শিশুরা নির্ভয়ে একটু বাসার বাইরে বেরোতে পারবে না, কখন কোন দিক থেকে কামড় দেয়, তা নিয়ে শঙ্কিত থাকতে হয়। সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, একবার কোনো কারণে জলাতঙ্ক হয়ে গেলে সর্বনাশ যা হওয়ার তা কিন্তু হয়েই যাবে। ফলে আগেভাগেই ভেবেচিন্তে সবার কথা শুনেই পদক্ষেপ যা নেয়ার এখনই নেয়া উচিত বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

কুকুর আক্রমণ করে দুর্বলদের : পশু চিকিৎসদের মতে, কুকুর সাধারণত কামড় দেয় দুর্বলদের। যেমন শিশুদের। অস্বাভাবিক আচরণ দেখলেও কুকুর কামড় দেয়। নারী, লুঙ্গি পরা লোক, পাঞ্জাবি পরা লোক, ভিক্ষুক, অদ্ভুত পোশাকের লোক, দারোয়ান শ্রেণীর লোকদের কুকুর বেশি কামড় দেয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ