বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

আইএস’র আয়ের উৎস : তেল বিক্রি ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

নতুন বার্তা : সিরিয়া ও ইরাকের বিরাট অংশ দখল করে রাখা ইসলামিক স্টেটের আয়ের প্রধান পথ হচ্ছে তেল বিক্রি, আর অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়।  তবে তাদের অর্থের আরো একটি বড় উৎস হলো, লুট হওয়া মূল্যবান প্রাচীন প্রত্নসামগ্রী চোরাই বাজারে বিক্রি করা।
নিরাপত্তা পরিষদ অভিযোগ করেছে যে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গীরা সন্ত্রাসী আক্রমণ পরিচালনার তহবিল গড়ে তুলতে ঐতিহ্যবাহী প্রত্নসামগ্রী লুট করছে। বিবিসি জানতে পেরেছে যে এই ব্যবসার রুট সিরিয়া থেকে তুরস্ক ও লেবানন হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত।
অনেক চেষ্টার পর ২১ বছরের এক তরুণের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আমরা তার নাম দিয়েছি মোহাম্মদ, তার বয়স ২১ - বাড়ি দামেস্কে। সে এই ব্যবসা চালায় সিরিয়া আর লেবাননের মাঝামাঝি বেকা উপত্যকায়। বৈরুতে একটি ফ্ল্যাটে বসে তার সাথে কথা হচ্ছিল। মোহাম্মদ বলছে, তার কয়েক জন বন্ধু আছে আলেপ্পোতে - যারা একজন ট্যাক্সি ড্রাইভারকে টাকা দিয়ে হাত করেছে, এবং তার মাধ্যমেই , প্রাচীর আংটি, ছোট ছোট মূর্তি, পাথরের মাথা ইত্যাদি পাচার করে নিয়ে আসে।
সে জানালো, এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামিক স্টেট। তারা সিরিয়ার - বিশেষ করে আলেপ্পোর - যাদুঘরগুলো থেকে এসব জিনিস চুরি করেছে। “এ ব্যবসায় ভালো লাভ হয়। কোনো কোনো জিনিস বিক্রি হয় পাঁচ লাখ থেকে দশ লাখ ডলার পর্যন্ত দামে।"
এসব জিনিস বিক্রি করার জন্য একজন দালালের দরকার হয়। এদের একজন হচ্ছে 'আহমেদ' - সে পূর্ব সিরিয়ার লোক হলেও ভালো তুর্কি বলে, এবং তুরস্কেরই একটি শহরে থাকে। তার সাথে স্কাইপে কথা হলো। সে দেখালো তার কাছে আছে অসংখ্য প্রাচীন পাথরের মূর্তি - মানুষের, পশু পাখীর - তা ছাড়া ফুলদানি, আর মুদ্রা ।
এগুলো সম্প্রতি খনন করে পাওয়া গেছে রাক্কা শহরের কাছে। এই এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করে ইসলামিক স্টেট - এবং তারাই এখানে ২০ শতাংশ কর নিয়ে খননকাজ চালানোর অনুমতি দিয়ে থাকে।
আহমেদ জানায়, কোনো মানুষের মূর্তি পাওয়া গেলে আইএসের লোকেরা তা ধ্বংস করে ফেলে।
তবে কিছু কিছু তাদের হাত এড়িয়ে পাচার হচ্ছে। এগুলো চোরা পথে, অনেক সময় শরণার্থীদের হাতে হাতে এসে পৌছায় লেবাননে- বৈরুতের প্রত্নসামগ্রীর ব্যবসায়ীদের হাতে।
তবে লেবানন এর আসল বাজার নয়। এগুলোর প্রকৃত গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপ এবং উপসাগরীয় ধনী দেশগুলো। সিরিয়ার সরকারি প্রত্নতাত্বিক বিভাগের ড. মামুন আবদুল করিম বলছেন, আইএসের দখল করা জায়গাগুলোয় বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই লুট বন্ধ করা সম্ভব নয়, কিন্তু এর বাণিজ্য বন্ধ করতে অনেক কিছুই করা সম্ভব। বিবিসি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ