পল্টনে দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সংগ্রাম অনলাইন :নতুন আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার বেলা দেড়টার দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে পল্টন এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জানান, আগামী শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সেখান থেকেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে যদি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা।
জানা যায়, আজ সকাল ৮টার দিকে আন্দোলনরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের হন। এ সময় তাঁরা রায়সাহেব বাজার মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনে অগ্রসর হয়ে পল্টন ময়দানে অবস্থান নেন। তাঁদের কয়েকজনকে কাফনের কাপড় পরে শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছে, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রশাসনের কোনো মিথ্যা আশ্বাসে আমরা আন্দোলন বন্ধ করব না। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর থেকে হলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বরাবরই প্রশাসন মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে, যে কারণে আজ ১১ বছরেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আবাসিক হল হয়নি। তাই আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কোনো ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সভাপতি মুজাহিদ অনিক বলেন, মীর কাসেমের রায়ের পর আন্দোলনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শুক্রবার একটি সংহতি প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করবেন বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ অন্যরা। এরই মধ্যে ধর্মঘট চলতে থাকবে।
এই ছাত্রনেতা জানান, যত দিন যাচ্ছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৃতীয় দিনের এ আন্দোলনে আজ আট হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।
গত ২৩ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরঘাট-গুলিস্তান সড়কে যান চলাচল করতে পারেনি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান জানান, রায়সাহেব বাজার এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়, যে কারণে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়নি। তারা কোনো ধরনের নাশকতা চালায়নি। এ জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ।
রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় জাতীয় চার নেতার নামে চারটি হল নির্মাণের দাবিতে গত ১ আগস্ট থেকে আন্দোলন শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা। এর পর থেকে প্রতিদিনই পুরান ঢাকার সড়ক অবরোধ করে নিজেদের দাবির পক্ষে বিক্ষোভ করতে থাকেন তাঁরা।