সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এক সপ্তাহে ১৫ পাক সেনা নিহতের দাবি ভারতের

২৮ অক্টোবর, এনডিটিভি : গত সপ্তাহজুড়ে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের গুলীতে ১৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ হামলাকে প্রতিশোধমূলক হামলা বলে উল্লেখ করেছে তারা। গতকাল শুক্রবার বিএসএফ-কর্মকর্তা অরুণ কুমারের দাবিকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি খবরটি নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফ-এর প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, দুই পাকিস্তানি ফ্রন্টিয়ার ফোর্স সেনা এবং ১৩ জন রেঞ্জারকে হত্যা করা হয়েছে। অরুণ কুমার বলেন, ‘ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমরাও এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব দিচ্ছি। আমাদের লোকজন যেটুকু দেখেছে সে অনুযায়ী আমরা হিসেব করে দেখেছি ১৫ জন রেঞ্জারকে হত্যা করা হয়েছে।’ গত ৫ দিনে পাকিস্তানি সেনাদের গুলীতে তিন বিএসএফ সেনা নিহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে এনডিটিভি। কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে শুক্রবারও গোলাগুলী হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে নওশেরা, সুন্দরবানি এবং পাল্লানওয়ালা সেক্টরে নতুন করে এ গোলাগুলী শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার থেকেই কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকাগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি রেখেছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানি সেনাদের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে নির্দেশ দেন। এর আগে বুধবার রাতে আরএস পুরা ও আর্নিয়া এলাকায় ১৫টি ভারতীয় পোস্ট এলাকায় গোলাগুলী হয়। এতে এক বিএসএফ সদস্য নিহত এবং ছয় গ্রামবাসী আহত হন বলে জানায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে,ভীমবার সেক্টরের চারটি ভারতীয় পোস্ট ধ্বংস করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। এতে পাঁচ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, সোমবার ভারতীয় পক্ষ থেকে ‘বিনা উসকানিতে’ হামলা চালানো হয়। এরপরই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তার জবাব দেওয়া হয়।
পাঠানকোটের সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা এবং পরবর্তীতে হিজবুল নেতা বুরহান ওযানিকে কথিত এনকাউন্টারে হত্যার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সাম্প্রতিক উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর আবারও জয়েশ ই মোহাম্মদের সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকে দায়ী করতে শুরু করে ভারত। পারস্পরিক দোষারোপ এবং এ নিয়ে আন্তর্জাতিক তৎপরতার এক পর্যায়ে ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাতে নিযন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের সেনারা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দাবি করে। ওই অভিযানে ৯ পাকিস্তানি সেনা ও ৩৫ থেকে ৪০ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয। ঘটনার পর থেকে দুই সেনা সদস্য নিহত হওযারখবর নিশ্চিত করে পাকিস্তান দাবি করে আসছে এটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল না, সীমান্ত সংঘর্ষ বা আন্তঃসীমান্ত গোলাগুলীর ঘটনা ছিল। ঘটনাকে ভারতের দিক থেকে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ প্রমাণ করে তাদের সামরিক শক্তি জানান দেওযার চেষ্টা করা হলেও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দাবিটি একটি ভ্রম। মিথ্যে প্রভাব তৈরির জন্য ভারতীযরা ইচ্ছে করে এমনটা করছে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভারতের দাবিকৃত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ এখন যতোটা না জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সাফল্য-ব্যর্থতার প্রশ্ন, তার থেকেও বেশি করে ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্ষমতা-আত্মমর্যাদা আর দম্ভের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ