সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পোশাক কারখানার ত্রুটি সংশোধনে দায়িত্ব পাচ্ছে দেশী ২৬ প্রতিষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে এবার দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও ত্রুটিপূর্ণ পোশাক কারখানার পরিদর্শন করার উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে শর্তসাপেক্ষে ২৬ প্রতিষ্ঠানের তালিকাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিদেশী প্রতিষ্ঠান অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স দুটি সংস্থা বর্তমানে কারখানা পরিদর্শন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের পাশাপাশি পোশাক খাত মূল্যায়নে রয়েছে সরকারের জাতীয় উদ্যোগ। দেশের মোট ১ হাজার ৫৪৯ কারখানা এ উদ্যোগের আওতায় রয়েছে। প্রাথমিক পরিদর্শনের পর কারখানাগুলোকে ঝুঁকির মাত্রাভেদে গ্রিন, ইয়েলো, অ্যাম্বার ও রেড শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। ‘ইমপ্রুভিং ওয়ার্কিং কন্ডিশন ইন দ্য রেডিমেড গার্মেন্ট সেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কারিগরি সহায়তায় এ কার্যক্রমে অর্থায়ন করছে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী।
এ কার্যক্রমের আওতায় পরিচালিত প্রাথমিক পরিদর্শনে ৩১৯টি কারখানাকে অ্যাম্বার শ্রেণীভুক্ত করা হয়। এসব কারখানাকে ডিইএ ও সিএপি বাস্তবায়নসাপেক্ষে উৎপাদন সচল রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোর মালিকপক্ষের গড়িমসিতে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে চলছে ধীরগতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিআইএফইর নেতৃত্বে অনুমোদিত প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান থেকে ডিইএ সম্পন্ন করার তৎপরতা চলছে। ডিইএ পদক্ষেপের মাধ্যমে কারখানা ভবনগুলোর ‘অ্যাজ বিল্ট’ নকশা নিরূপণ করতে হচ্ছে। পরীক্ষা করতে হচ্ছে ভবনের তলদেশের মাটিও। আবার কংক্রিট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি যাচাই করা হবে ভবনের কলামের সামর্থ্য। এছাড়া কোন কলামগুলোর ভিত আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন, তা চিহ্নিত করতে কারখানার নমুনাও তৈরি করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ডিইএ সম্পাদনের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)। এ উদ্যোগে সাড়া দেয়া ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে ডিআইএফইর টাস্কফোর্স অন স্ট্রাকচারাল ডিইএ। সরেজমিন যাচাই-বাছাই শেষে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এর মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করে টাস্কফোর্স। এছাড়া আরেকটি ধাপে আরো ১৩ প্রতিষ্ঠানসহ ২৬ টি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করা হয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টির নাম জানা গেছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সলিউশন, ইকিউএমএস কনসালটিং লিমিটেড, ইকিউব ডিজাইন, টার্বো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, আইডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, অসপিশাস, এমকে এন্টারপ্রাইজ, ইনফিনিটি কনস্ট্রাকশন, সেফটি কনসালট্যান্ট বিডি, শহিদুল্লাহ অ্যান্ড নিউ অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড, সেফটি সোর্স লিমিটেড, প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড ও কনসেপ্ট ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. সামছুজ্জামান ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, দুই ধাপে ২৬টি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করেছি আমরা। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আলোচনা হবে। কীভাবে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে জাতীয় উদ্যোগের মূল্যায়ন কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরই মধ্যে কিছু ডিইএ কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র জানায়, তালিকাভুক্ত এসব প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানকে কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। নির্বাচিত প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৌশলী চাকরি ছেড়ে গেলে একই যোগ্যতাসম্পন্ন প্রকৌশলী নিয়োগ করে ডিআইএফইকে তা তাৎক্ষণিকভাবে অবগত করতে হবে। এর অন্যথা হলে প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি বাতিল করা হবে বলে শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় উদ্যোগে মূল্যায়নকৃত কোনো কারখানার সঙ্গে ডিইএ সম্পাদনে চুক্তির ক্ষেত্রে তা ডিআইএফইকে লিখিতভাবে অবহিত করার শর্তও রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ