রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

চীনের সঙ্গে যুদ্ধের আশঙ্কা নাকচ করলো ভারত

১৮ জুলাই, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে : সিকিম সীমান্তের ডোকলামে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী এখনো মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। এরই মধ্যে চীনা সেনা তিব্বতে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালিয়েছে বলে জানায় দেশটির গণমাধ্যম। জানা যাচ্ছে, সীমান্ত উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধের ইঙ্গিত দিয়ে তিব্বতে সেনা তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন। প্রচুর যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে তিব্বতে লাইভ-ফায়ার এক্সারসাইজ করেছে চীনা সেনারা। এতে আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধের আশঙ্কা করলেও ভারত তা নাকচ দিয়েছে।
ডোকলাম নিয়ে উত্তপ্ত বাগ্যুদ্ধের পাশাপাশি সামরিক প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে দু’দেশই। স্নায়ুযুদ্ধে চাপ বাড়াতে ইতিমধ্যেই কয়েক বার মহড়া চালিয়েছে চীন।
তিব্বত কম্যান্ডের অধীনে থাকা একটি ব্রিগেড দ্রুত সেনা পাঠানো ও বিভিন্ন ইউনিটের একসঙ্গে হামলার একটি মহড়া দিয়েছে। ওই ব্রিগেডটি পার্বত্য যুদ্ধে (মাউন্টেন ওয়ালফেয়ার) বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সেটি এখন ডোকলামের কাছেই পূর্ব তিব্বতের লিঝি এলাকায় মোতায়েন রয়েছে।
চীনা চ্যানেল একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে মহড়ায় ট্যাঙ্কবিধ্বংসী গ্রেনেড ও বাঙ্কার ধ্বংসের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। পদাতিক বাহিনীকে সাহায্য করতে হাউইৎজার কামান কী ভাবে ব্যবহার করা হবে তাও পরীক্ষা করে দেখছে চীনা সেনা।
তিব্বতের মোবাইল সংস্থার কর্মীরা জরুরি অবস্থায় দ্রুত একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক তৈরির মহড়াও করেছেন।
ভারতের উপরে চাপ আরো বাড়াতেই যে চীনা সেনা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা নিয়ে সন্দেহ নেই প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।
চীনা বিশেষজ্ঞ ঝৌ চেনমিংয়ের মতে, ‘চীনা সেনা দেখাতে চেয়েছে তারা সহজেই ভারতকে কাবু করতে পারবে।’
চীনের সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের তিব্বতে লাইভ-ফায়ার এক্সারসাইজ হয়েছে। তবে ঠিক কবে বা কখন এই মহড়া হয়েছে, তা জানা যায়নি। শুধু একটি ফুটেজ দেখিয়ে বলা হয়েছে, চীনা আর্মির তিব্বত মিলিটারি কমান্ড এই মহড়া চালিয়েছে। এটি চীনের অন্যতম মাউন্টেন ব্রিগেড। এই তিব্বত কমান্ডই ভারত-চীন সীমান্ত বা লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের (খঅঈ) দায়িত্বে রয়েছে।
জানা যায়, চীনের সেনা মহড়ায় ছিল দেশটির তৈরি লাইট ব্যাটল ট্যাংকসহ অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে অশান্তি চলছে চীনের। বারবার ভারতকে যুদ্ধের হুমকি দিয়েও আসছে বেইজিং। চীনা আর্মি ভারতে ঢুকে রাস্তা তৈরির কাজে বাধা দিয়েছে বলেও একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে।
এতে ভারত-চীন সম্পর্ক এখন ডোকলাম সীমান্ত ইস্যুতে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে দেশ দুটির সেনাবাহিনী। এমন অবস্থায় অনেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করলেও তা নাকচ করে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ভারত।
সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গোপাল বাগলে জানান, আমাদের কূটনৈতিক মাধ্যম খোলা রয়েছে। দু’দেশেই একে অপরের দূতাবাস রয়েছে। ওই মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাগলে মনে করিয়ে দেন, সীমান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য ভারত ও চীনের সংগঠিত ও পারস্পরিক সম্মত পন্থা রয়েছে। এছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, হামবুর্গে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এর মধ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকের উল্লেখ করে বাগলে বলেন, হামবুর্গে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ইস্যু উঠে এসেছে। যদিও, ডোকালাম প্রসঙ্গে দু'জনের মধ্যে কথা হয়েছে কি না সেই নিয়ে খোলসা করেননি বাগলে। যদিও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছে চীন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ