বিসিবি কমিটির কার্যক্রম নিয়ে হাইকোর্টের রুল
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্তমান নির্বাহী কমিটিকে কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তবে আগামী ২ অক্টোবর বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) হতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিসিবির এজিএমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ রিটে বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের সময় বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস ও সাবেক ক্রিকেটার আকরাম খান উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিসিবির বর্তমান কমিটিকে কার্যক্রম পরিচালনা করা থেকে বিরত রাখতে, আর এজিএম ও ইজিএম করা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা চেয়ে বিসিবির সাবেক পরিচালক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন রিট আবেদনটি করেছিলেন। গত সোমবার রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশের জন্য রাখেন আদালত। রিটে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতিসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব শফিক ও কে এম হাফিজুল আলম। বিসিবি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) পক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল বলেন, বিসিবির বর্তমান কমিটিকে কাজ চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তবে আগামী ২ অক্টোবর বিসিবি এজিএম ও ইজিএমের ওপর কোনো স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। ফলে ওই দিন এজিএম ও ইজিএম অনুষ্ঠানে আইনগত কোনো বাধা নেই।
এর আগে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) বন্ধ রাখতে বিসিবি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে (এনএসসি) গত ১৭ সেপ্টেম্বর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। গঠনতন্ত্র পরিবর্তন না করেই নির্বাচনী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এজিএম ও ইজিএমের উদ্যোগ নেয়ায় নোটিশটি পাঠান তিনি। এতে বিসিবির বর্তমান বোর্ড সভাপতি এবং পরিচালনা পর্ষদকে তাদের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
আইনজীবী জানান, ২০১২ সালে সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলছে বিসিবির বর্তমান কমিটি। তাই এ কমিটির কোনো বৈধতা নেই। আমরা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে বলেছি, বিসিবির এ কমিটি যেন কোনো এজিএম, ইজিএমসহ পরিচালনা করতে না পারে। তা স্বত্ত্বেও এজিএমর প্রস্তুতি নেয়ায় রিট আবেদন করা হলো।
বিসিবির গঠনতন্ত্রে আনা সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এবং জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের তখনকার সভাপতি ইউসুফ জামিল ২০১২ সালের ডিসেম্বরে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট ওই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এনএসসি ও বিসিবি। শুনানি শেষে আপিল নিষ্পত্তি করে গত ২৬ জুলাই রায় দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২ অক্টোবর এজিএম ও ইজিএম ঘোষণা করে বিসিবি।