রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চিনির মূল্য যদি লবনের মূল্যের কাছাকাছি আসে তাহলে এ শিল্প ভাল করবে না

জয়পুরহাট সংবাদদাতা (১১ নবেম্বর) : বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম দেলোয়ার হোসেন বলেছেন- চিনির মূল্য যদি লবনের মূল্যের কাছাকাছি আসে তাহলে এ শিল্প ভাল করবে না। সব কিছুর দাম বাড়লেও চিনির মূল্যে কমে বর্তমানে ৪০-৪২ টাকা কেজি। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চিনি শিল্প রক্ষার কাজ করা হচ্ছে এ শিল্পকে লাভজনক করতে হলে মূল্যে বৃদ্ধি করা সহ বেশি বেশি আখ রোপন করতে হবে তাহলে এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। আখের মূল্যে ৬০ টাকা মন থেকে এখন ১শ’৪০ টাকা করা হয়েছে। মিলের লোকসান কমাতে এবং আয় বৃদ্ধি করতে মিলের অব্যবহৃত অসমতল জমিকে সমতল এবং পরিত্যক্ত ভবন ও জঙ্গল পরিস্কার করে ড্রাগন, ভিয়েতনাম ওপি হাইব্রিড নারিকেল বাগান এবং মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। তিনি শনিবার জয়পুরহাট সুগার মিলে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সাথে আখ রোপন, পরিস্কার-পরিচ্ছন আখ সরবরাহ গ্যারেজ ও কারখানা রক্ষণাবেক্ষণে বিষয়ে সাধারণ মিলনায়তনে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এ সব কথা বলেন।  মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসএফআইসি’র পরিচালক (উৎপাদন ও প্রকৌশল) হারেছ আলী। উপ-মহাব্যবস্থাপক আব্দুস ছালাম ফকিরের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আব্দুল বারী, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারন সম্পাদক সিআইসি খোরশেদ আলম, সিআইসি সাকি মাহমুদ, সমলেন বিশ্বাস, মোমিনুর রহমান, কারখানার মোজাম্মেল হক, বয়লার হাউজ এর মাসুদ রানা সহ অন্যান্য শ্রমিকরা। এসময় শ্র্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতনের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করলে চেয়ারম্যান বলেন মিলের উৎপাদিত চিনি ও মোলাসেস বিক্রি করে বেতন দেওয়া হবে এবং এ খাতে সরকারের সরাসরি টাকা দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। তাই তিনি শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরকে এ সমস্যা সম্পর্কে ভাল ভাবে জানার আহবান জানান। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সাখাওয়াৎ হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) রাব্বিক হাসান,  মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খুরশীদ জাহান মাফরুহা, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী আকতার, সাধারন সম্পাদক আহসান হাবীব রুমেল সহ অন্যান্য কর্মকর্তা। প্রধান অতিথি এর পূর্বে মিলের জমিতে ভিয়েতনাম ওপি হাইব্রিড নারিকেল বাগান, মাশরুম চাষ প্রকল্প এবং মিলের নিজস্ব অর্থায়নে মিলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শহীদ মিনার এর উদ্বোধন করেন। এ ছাড়াও তিনি অগ্নি প্রতিরোধ, উদ্ধার ও ভূমিকম্প বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও মহড়া কার্যক্রমের পরিদর্শন করেন।  সভায় জিএম কৃষি জানান, জয়পুরহাট সুগার মিলে ২০১৮-১৯ আখ রোপণ মৌসুমে ১২ হাজার একর জমি লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। এ ছাড়াও এবার মিলের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ১ হাজার একর জমিতে আখ রোপনের জন্য বাধ্যতামূলক টার্গেট দেওয়া হয়েছে।  প্রধান অতিথি আরো বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে আখ রোপণের মাধ্যমে ফলন বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য মিল কর্তৃপক্ষ আখচাষীদের সার, বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আখের মূল্য বৃদ্ধিতে চাষীরা আখ চাষে এখন উৎসাহিত হচ্ছে। এ জন্য আখের ফলন বৃদ্ধি করতে সময়মত আখ রোপণ, যথাযথ আখের পরিচর্যা, পোকামকড় দমন, চাষাবাদ যান্ত্রীকিকরন এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। তিনি সকলকে বেশী বেশী আখচাষের মাধ্যমে মিলের লোকশান কমাতে এগিয়ে আসার আহবান জানান। এ দিকে শুক্রবার সদর-এ সাবজোন এলাকায় খনজনপুর চকশ্যামে কৃষকদের জমিতে চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন গিয়ে সরাসরি আখ রোপন করেন এবং আখ রোপন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে চকশ্যাম স্কুল মাঠে আখচাষী মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় অত্র এলাকার বিশিষ্ট আখচাষী ও মিলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ গ্রহণ করে। এছাড়াও জয়পুরহাট সুগার মিলের কেজি এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন  শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানকালীন প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ