সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে -আফরোজা আব্বাস

গতকাল বুধবার ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের প্রচারণায় নৌকা সমর্থকদের বাঁধা। পুলিশ আফরোজাকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছে -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রচারণার সময়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস। গতকাল বুধবার বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করে বলেন, আমি বাসাবো চৌরাস্তায় গনসংযোগ করার জন্য গাড়ি থেকে নেমেছি মাত্র। দূর থেকে আমি দেখলাম যে, ওরা নৌকার শ্লোগান দিতে দিতে হাত উুঁচ করে আসলো, ওদের হাতে শুধু লাঠি আর হকিস্টিক। আমি সিনোমায় দেখেছিলাম ভাই- কিছু হলে লাঠিয়াল বাহিনী আসে। এই প্রথম বাস্তবে দেখলাম লাঠিয়াল বাহিনী। ওদের উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে মেরে ফেলা একদম। আমাকে হত্যার উদ্দেশে এই আক্রমণ ওরা চালায়। আমি গাড়ি থেকে বের না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলতো। আমার গায়ে হাত দিলো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। আমার ড্রাইভারকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে, ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত করেছি। আমার গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলেছে, গাড়ির কোনো গ্লাস নেই।
গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও নেতা-কর্মীসহ নিরহ পথচারীদেরও সন্ত্রাসী আক্রমণ করেছেন বলে জানান আফরোজা আব্বাস। সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের মেরেছে এবং তাদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলেছে, মহিলা দলের কর্মীদের চুল ধরে বেধড়ক মেরেছে এবং আমার সাথে থাকার আত্বীয় স্বজনদেরও তারা মেরেছে বলে জানান তিনি।
আফরোজা আব্বাস, ওরা (আওয়ামী লীগ) চাচ্ছে যে, আমারা ফিরে যাই, আমরা প্রচারণা বন্ধ করি। আমি বলতে চাই, আমি ফিরে যাবো না। এক হলেও এগিয়ে যাবো, শেষ পর্যন্ত লড়ব । আমরা কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায় করতে আমরা দেবো না। এখন থেকে যেখানেই বাঁধা সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় কমলাপুর হাইস্কুল এন্ড কলেজ এলাকায় সাড়ে ১১টায় মাদারটেক চৌরাস্তার কাছে গণসংযোগের শুরুতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আফরোজা আব্বাসের ওপর হামলা চালায়। এতে তার পাজেরো জিপ ভাংচুর করে এবং গাড়ির চালক হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শাহজাহানপুরে ঢাকা-৮ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে যুব লীগ, ছাত্রলীগ, যুব লীগের ৩০ জন নেতা-কর্মী এই হামলা চালায়। এতে মধ্যে সবুজবাগ থানা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহরিয়ার, যুব মহিলা লীগের রিনা খানম, সবুজবাগ থানার যুব লীগের হিল্টন, রিপন, নাদিম, মঞ্জু কমিশনারের মেয়ে তানিয়া, আওয়ামী লীগের রাজ্জাক, শ্রমিক লীগের জাহাঙ্গীর প্রমুখ এই হামলা অতর্কিতে চালালো। আমরা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাচিছ না, সরকার থেকে তো নয়ই।
আপনাদের কাছে বিচার চাই। আমাদের একমাত্র ভরসা আল্লাহ ও এই সাংবাদিকরা ভাইরা। আপনাদের কাছে কোনো পক্ষ-পাতিত্ব আচরণ চাই না। আপনদের কাছে আমি নিরপেক্ষভাবে সহায়তা চাই। নির্বাচন কমিশনের কাছে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে লিখিতভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিইসি ও সচিবকে ফোন করেছি উনারা রিসিভ করেনি। তারপর কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাহেবকে জানিয়েছি।
আমি থানায় ডায়েরী করতে চাচ্ছি। না নিলে তো আমি আদালতে যাবো।  কারণ এভাবে চলতে পারে না। ওরা মারবে আর আমরা মার খেয়ে যাবো এটা তো হয় না, আমাদের তো প্রতিরোধ করতে হবে।
এই অবস্থায় প্রচারনা অব্যাহত রাখবেন কিনা জানতে চাইলে আফরোজা আব্বাস বলেন,  অবশ্যই আমরা প্রচারনা চালাবো। দেখি না ওরা কত আসতে পারে। একা হলেও দাঁড়িয়ে থাকবো। আপনারা পাশে থাকবেন। আপনারা নিরপেক্ষ থাকলে সব ঠিক বাংলাদেশে, আপনারা নিরপেক্ষ থাকলে তবেই দেশে গণতন্ত্র থাকবে।
এর আগে ঢাকা-৮ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমার সহধর্মিনী প্রচারনার সময়ে তার ওপর খুবই মারাত্মকভাবে হামলা করা হয়েছে। এটা বিভৎস ও নারকীয়। আওয়ামী লীগ তাদের স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।
আমি এই এলাকার এই মাটির সন্তান। এখান থেকে আমাদের বিএনপি পরিবারের কোনো সদস্যকে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ তাদের নেই। এটা তারা খুব ভালোভাবে জানে। নির্বাচন একদিন থাকবে না, আমাদের প্রার্থিতাও থাকবে না, আমাদেরকে এলাকায় বসবাস করতে হবে এটা সকলের মনে রাখা উচিৎ। আমি ভেবেছিলাম, এই এলাকায় অন্তত: কেউ কিছু করবে না। আমি জানি না, কোনো  অপশক্তির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে তারা আজকে বিএনপির প্রার্থীর গায়ে হাত তোলার মতো, জীবননাশের প্রচেষ্টা চালিয়েছে আজকে। সহধর্মিনী কোনো রকমের বেঁচে যান।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে যখন আঘাত করার চেষ্টা করে জীবনহানির লক্ষ্যে। গাড়ির ড্রাইভার প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে আছে । তার  ২২টি স্টিচ লেগেছে, উরুতে হাঁড় বেরিয়ে গেছে।
আব্বাস বলেন, শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা আমার অধিকার। আমার এ্ অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত করছে। আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার গ্যারেন্টি পাচিছ না। আমরা স্বাভাবিক মৃত্যু ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার গ্যারেন্টি পাচ্ছি না।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালেও তার বাসা থেকে বেরুনোর সময়ে ৮জন নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করার কথাও জানান। আমার বাসার চারপাশে সাদাপোশাকে লোকজন ছড়িয়ে আছে। আমরা অবরুদ্ধ হয়ে আছি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ