বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক স্থিতিশীলতায় আরো অবদান রাখার আহ্বান

 

সংগ্রাম  ডেস্ক : সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির উন্নয়নে এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক স্থিতিশীলতায় আরো অবদান রাখতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বহির্বিশ্বের বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সততা ও পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে সুনাম ও সুখ্যাতী অর্জন করেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর সফলতায় সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সাফল্য দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। ভবিষ্যতেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে যাতে আমরা উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিতে পারি।

তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ‘ডিএসসিএসসি ২০১৮-২০১৯ কোর্সের’ গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এ আহ্বান জানান।

কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. এনায়েত উল্লাহ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

মন্ত্রীবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, ভারপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণ, বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ এবং উর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনী হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তাদের অবদান প্রশংসনীয়।

 শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন নতুন পরিবর্তনের ফলে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা ও দায়িত্বে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যাপীঠ থেকে ‘পিএসসি’ ডিগ্রী অর্জন, যেকোন সামরিক অফিসারের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। আজ যারা সাফল্যের সঙ্গে কোর্স সম্পন্ন করে গ্র্যাজুয়েট হল তাদের সকলকে জানাই আন্তরিক অভিবাদন।’

তিনি বলেন, ‘আমি একই সাথে আপনাদের জীবনসঙ্গিনীগণকেও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের এ সাফল্যের পিছনে তাদেরও অনেক অবদান রয়েছে। সবর্দা পাশে থেকে তারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আমি আপনাদের সকলের পেশাগত, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের সাফল্য কামনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহান ভাষা আন্দোলনের এ মাসে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি বীর ভাষা শহীদদের। আমি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে উদয় হয়েছে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ- বাংলাদেশ।’

জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রদ্ধা জানাই মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের প্রতি। শ্রদ্ধা জানাই সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি যারা দেশের শান্তি রক্ষার্থে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তি মিশনে প্রাণ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ স্টাফ কলেজ এখন দেশের সীমা পেরিয়ে বর্হিবিশ্বে এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত এ স্টাফ কলেজে সেনাবাহিনীর ৪৩টি, নৌবাহিনীর ৩৭টি এবং বিমানবাহিনীর ৩৯টি স্টাফ কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪২টি বন্ধুপ্রতীম দেশের ১ হাজার ১১১ জন অফিসার এখান থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। তারা সকলেই নিজ নিজ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।’

তিনি বলেন, এ বছর মোট ১১ জন মহিলা অফিসার গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা অফিসারের কোর্সে অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আশা করি, মহিলা অফিসারদের অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘নিজ নিজ দেশে ফিরে আপনারা আমাদের শুভেচ্ছা এবং দেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও অতিথিপরায়ণ জনগণের কথা আপনাদের দেশের জনগণের কাছে পৌঁছে দিবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করব ইনশাআল্লাহ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ