বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম নেতারা

১১ মার্চ, পার্সটুডে : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রমজান মাসে লোকসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় ক্ষোভ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেখানকার মুসলিম নেতারা রমজান মাসকে বাদ রেখে নির্বাচনের তফসিল বিবেনার নেয়ার দাবি জানান তারা। আগামী মে থেকে সম্ভাব্য রমজান মাস শুরু হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মে মাসের , ১২ ১৯ তারিখ শেষ তিনদফার নির্বাচন হবে। এভাবে রমজানের মধ্যে নির্বাচন হওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে রোজা রেখেই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সাত দফায় নির্বাচন হবে। পশ্চিমবঙ্গের পৌর নগরোন্নয়ন মন্ত্রী কোলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মতে, নির্বাচন হল গণতন্ত্রের উৎসব। সব ধর্মকেই তৃণমূল সম্মান করে। কিন্তু এভাবে রমজান পর্যন্ত ভোট টেনে নিয়ে যাওয়া মোটেই ঠিক হয়নি। দৈনিকপুবের কলমপত্রিকার সম্পাদক সংসদ সদস্য আহমদ হাসান ইমরান বলেন, ‘রমজান মাসে দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচনি তপসিল তৈরি করা হয়েছে। এরফলে মুসলিম ভোটার ভোট কর্মীদের ইবাদতে অবশ্যই অসুবিধা হবে। দুর্গাপুজা কিংবা নবরাত্রির সময়েও ভোট অনুষ্ঠান করা উচিত নয়। নাগরিকদের ধর্মীয় চেতনাকে অবশ্যই মর্যাদা দিতে হবে।

রমজান মাসে নির্বাচন প্রসঙ্গে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ ভোট গণতন্ত্রের একটা উৎসব।

এই উৎসব রমজান মাসে হওয়ার কারণে সাধারণ ভোটকর্মী থেকে শুরু করে ভোটদাতা, ভোট প্রচারকসহ সকলের জন্যই একটা বাড়তি সমস্যা তৈরি করবে। আমরা আগেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম যাতে রমজান মাস শুক্রবারকে যেন ভোট গ্রহণের দিন থেকে বাইরে রাখা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা গেল জুমাবারকে ভোট গ্রহণের দিন থেকে বাইরে রাখা হলেও রমজান মাসের মধ্যে কয়েক দফা ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। এটা না করলেই আমরা খুশি হতাম।

সিপিএম নেতা সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিমের মতে, ‘ দেশের প্রধানমন্ত্রী মুসলিমদেরইমোশন’- গুরুত্ব দেন না। প্রধানমন্ত্রী মুসলিম সম্প্রদায়কে গুরুত্ব না দেয়ার জন্যই রমজানের মধ্যে নির্বাচন করাচ্ছেন। আগে চক্ষুলজ্জা ছিল, এখন তাও চলে গেছে। রমজান মাসে নির্বাচন হওয়ায় ভোট প্রচারের সমস্যাও হবে। রমজান মাসে নির্বাচন না করলেই পারত।

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার ঐতিহ্যবাহী নাখোদা মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিক কাশেমি বলেন, ‘রমজান মাস ত্যাগ তিতিক্ষার মাস। এই মাসে নির্বাচন করা উচিত হয়নি। এতে রোজাদারদের অসুবিধা হবে।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি উত্তর ২৪ পরগণা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ কে এম ফারহাদ বলেন, ‘রমজান মাসে কেন নির্বাচন রাখা হল? এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ভাবা উচিত ছিল। এরফলে রোজাদারদের অসুবিধায় পড়তে হবে।

বিধায়ক ডা. এম নূরুজ্জামান বলেন, ‘রমজান মাসে ভোট হলে স্বাভাবিকভাবে মুসলিম সমাজে কিছু সমস্যা দেখা দেবে। সাত দফায় নির্বাচন না করে রমজান মাসের আগেই নির্বাচন শেষ করা উচিত ছিল।

জামায়াতে ইসলামী হিন্দের রাজ্য সভাপতি মুহাম্মদ নুরুদ্দিন বলেন, ‘রমজান মাসে নির্বাচন না হওয়া উচিত। এই মাসে নির্বাচন এড়ানো গেলে ভালো হতো।

রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘রমজান মাসে নির্বাচন হওয়া উচিত নয়। বৃহত্তর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কথা ভেবে রমজান বাদ দিয়ে নির্বাচন হওয়া উচিত। এরফলে মুসলিম ভোটকর্মীরা অসুবিধার মুখে পড়বেন।

উল্লেখ্য, রোববার ভারতের ১৭ তম লোকসভা নির্বাচনের তপসিল ঘোষণা করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। ৫৪৩ আসনের জন্য আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সাত দফায় নির্বাচন হবে। প্রায় ৯০ কোটি ভোটার নির্বাচনে অংশ নেবেন। ফল ঘোষণা হবে ২৩ মে।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ