রবিবার ০৫ মে ২০২৪
Online Edition

প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রধানমন্ত্রী এটাকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে

গতকাল সোমবার ডিআরইউ সাগর-রুনী মিলনায়তনে জাসাস আয়োজিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : সংখ্যালঘু প্রশ্নে ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রধানমন্ত্রী এটাকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল সোমবার এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন একথা বলেন। তিনি বলেন, এদেশের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে তাকে বিনষ্ট করার জন্য যে প্ররোচণামূলক কথা বলেছে এর জন্য অবশ্যই প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো। এদেশের মানুষ মামলাও দায়ের করেছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা স্বাভাবিকভাবে আমরা যদি বলি এর মধ্যে কোনো রহস্য আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এটাকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু এতো বোকা না যে, কেনো আজকে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে কথা বলতে বারণ করেছেন আমাদের প্রধানমনন্ত্রী। এটা যখন আমরা বলি এটাও নাকী গুজব। একই অনুষ্ঠানে সরকারের পূর্ব-প্রস্তুতির অভাবেই ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সেগুন বাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস মহানগরের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর জাসাসের আহ্বায়কের আহ্বায়ক মীর সানাউল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, জাসাসের লিয়াকত হোসেন, শিবা সানু প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
প্রিয়া সাহা প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ বলেন, যখন আমরা দেখি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের একজন নাগরিক প্রিয়া সাহা- বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এই সম্প্রীতি ভঙ্গ করার জন্য মিথ্যাচার করছে এবং সংখ্যা বলে দিচ্ছে যে, তিন কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দু সম্প্রদায় বা মাইনোরিটি এদেশ থেকে উদাও হয়ে গেছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সন্তান জয়ও (সজীব ওয়াজেদ জয়) বলতে হয়েছে যে, এতোগুলো মানুষ উদাও হয়ে গেলো দেশের মানুষ কেউ জানলো না, এই মিডিয়া ব্যর্থ। কত মিথ্যাচার প্রিয়া সাহা সেখানে করতে পারে। এই মিথ্যাচারের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সঙ্গে সঙ্গে বলেছিলো- এই বক্তব্য দেশদ্রোহী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাংলাদেশ তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা হয়েছিলো। লন্ডন থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিলেন, ওবায়দুল কাদের সেটাই বললো যে, উনি নির্দেশ দিয়েছেন তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কেনো বলেছেন?
তিনি বলেন, আমরা কিছু খবর জানি, এই প্রিয়া সাহার কিভাবে আমেরিকা গেলেন? কোন সম্মেলনে গেলেন? সেই সম্মেলনের দল নেতা ছিলেন কে? সেই দল নেতা ছিলেন- আমাদের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী। সেই ডিলিগেশনের সদস্য ছিলেন প্রিয়া সাহা। যে কেউ ব্যক্তি ডোনাল্ট ট্রাম্পের সাথে দেখা করতে পারে না। এটাও যদি আমাদের  হাই কমিশন বা বাংলাদেশ সরকারের হাত না থাকতো সম্ভব ছিলো না প্রিয়া সাহার ওই পর্যন্ত যাওয়া।  সেখানে গিয়ে এতো বড় মিথ্যাচার করেছে যে, এদেশের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে তাকে বিনষ্ট করার জন্য যে প্ররোচনামূলক কথা বলেছে এর জন্য অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো।
এদেশের মানুষ ও আওয়ামী লীগও মামলা দায়ের করেছিলো কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা স্বাভাবিকভাবে আমরা যদি বলি এর মধ্যে কোনো রহস্য আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এটাকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন। প্রিয়া সাহা যে দলের সদস্য যে দলের দল নেতা ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু এতো বোকা না যে, কেনো আজকে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে কথা বলতে বারণ করেছেন আমাদের প্রধানমনন্ত্রী। এটা যখন আমরা বলি এটাও নাকী গুজব।
তিনি বলেন, আজকে সর্বক্ষেত্রে সমাজের অবক্ষয়। শিশু ধর্ষন, শিশুদের মাথা কাটা, গণপিটুনি নানা ঘটনা ঘটছে। সরকারি বড় বড় কর্মকর্তাদের ইদানিংকালে আমরা গ্রেপ্তার দেখছি। গতকাল কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি, এর আগে পুলিশের ডিআইজি. এর আগে দুদকের উপ-পরিচালক। এভাবে আস্তে আস্তে বাধ্য হচ্ছে, এতোই তারা করছে যেগুলোর অনেকগুলো লুকানো যাচ্ছে না বলে গ্রেপ্তার হচ্ছে। এসব আমাদের সমাজের জন্য ভালো লক্ষন নয়। এই সমাজের সর্বাঙ্গে পঁচন লেগেছে। এটা শুরু হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর রাতে থেকে। এই পঁচন রোধ করতে হলে অবশ্যই জনগনের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে, অবশ্যই জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।। আর গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে তাকে কারাগারে রেখে এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না।
 ডেঙ্গু প্রসঙ্গে বিএনিপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু হয়, এটা আগে থেকেই ছিলো। আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রী ছিলাম- ২০০১ থেকে ২০০৬ সালেও ডেঙ্গু ছিলো। আমাদের সরকারের সময়ে আগে-ভাগে থেকে কিছু প্রস্তুতি গ্রহন করেছি যার জন্য ডেঙ্গু হলেও মৃত্যু সেরকম হয় নাই, আর এতো সংখ্যায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় নাই। এই ডেঙ্গুকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা যেতো যদি সময় মতো এই সরকার ব্যবস্থা নিতো। আপনারা দেখেছেন, সরকারের যা করণীয় ছিলো তারা সেটা করে নাই। এখন ডেঙ্গু মহামারী আকারে বিস্তার করেছে। এর জন্য সরকার, বিশেষ করে ঢাকায় মেয়ররা এটা তাদের ব্যর্থতা অথবা অবহেলা। তার জন্য এ ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে।
সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন- আগে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, ডেঙ্গুর প্রভাব বাড়তে পারে, এসিড মশার বিস্তার বেশি হতে পারে। তাই এটার ব্যাপারে এখনই ব্যবস্থা নেয়া উচিত। আপনারা শুনেছেন, দুই মেয়র বলেছেন এসব কিছু না, মন্ত্রী বলেছেন এটা সামান্য কিছু- পত্র-পত্রিকা-মিডিয়া এটাকে বাড়িয়ে বলছে। প্রথম থেকে এটাকে তারা(সরকার) গুজব বলতে চেয়েছে। এটা কী গুজব? এটা গুজব না এটা বাস্তবতা। আমাদের প্রশ্ন কেনো সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হলো। এটার জন্য ব্যর্থতা সরকারের, এটার জন্য ব্যর্থতা ঢাকার দুই মেয়রের।
তিনি বলেন, আজকে সরকার বলছেন, যদি প্রাইভেট বাড়িতে কোথাও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। অথচ সরকারি যে অফিসগুলো আছে এটা হলো সবচেয়ে বড় জায়গা যেখানে বৃষ্টির পানি পড়লে এসিড মশার প্রজনন হয়। আপনারা জানেন যে, এডিস মশা খুব ভদ্র মশা, একদম স্বচ্ছ পানি ছাড়া এগুলোর প্রজনন হয় না। ডোবা-নালাতে যে মশার বিস্তার হয়, এই মশা(এসিড) কিন্তু সেই মশা না। তারা জন্মলাভ করে স্বচ্ছ পানি, বৃষ্টির পানিতে। দেখা যায়, সরকারি দালানগুলোর ছাঁদে কী হচ্ছে না হচ্ছে কোনো খবর নেই। যারা ব্যক্তি মালিকানায় বিল্ডিংয়ের মালিক তার কিন্তু চিন্তা আছে ছাঁদে কী হচ্ছে না হচ্ছে। নিজে হলেও হাঁটতে যায়- সেখানে পানি আটকিয়ে থাকার কথা নয়। এখন শুনতেছি, ঔষধেও নাকী ভেজাল। যদি আপনি ঔষধ আনবেন, কম দামে আনবেন, কমিশন বেশি খাবেন তাহলে তো ঔষধ ভেজাল হবেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ