শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
Online Edition

ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে’র অর্ধ কোটি টাকার কাজে দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তে দুদুকের অভিযান

খুলনা অফিস : খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোমবার বিকেলে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) অভিযান চালায়। তাদের প্রাথমিক তদন্তে ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনুকুলে বরাদ্দকৃত অর্ধকোটি টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। এ সময় দুদক টিম ওষুধ স্টোরে অভিযান ও রোগীদের সাথে কথা বলা ছাড়াও এইচইডি কাজ পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৩টা ধাপে মোট ২৬ লাখ ৯৩ হাজার ২শ’ ৭৪ টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২টা ধাপে মোট ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫শ’ টাকা অর্থাৎ ২ অর্থ বছরে প্রায় ৫১ লাখ ৭২ হাজার ৭শ’ ৭৪ টাকা খুলনার ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়। খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশলের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের দ্বারা ঠিকাদারের মাধ্যমে হাসপাতাল ভবন সংস্কার,  পেইন্ট, দরজা, জানালায় ও গ্রিলে রং, গামারী কাঠের দরজা স্থাপন, ৫৪টি জানালায় থাই গ্লাস ও গ্লিল স্থাপন, ছাদে আরসিসি প্যাড ঢালাইসহ বিভিন্ন কাজের কথা উল্লেখ করা হয়। তবে দুদক টিম সরেজমিনে হাসপাতালের টিএইচএ ডা. মো. আব্দুল মজিদ ভবনে জাম কাঠ ও গামারী কাঠের কোন দরজা স্থাপন দেখাতে পারেননি। এমনকি কাঠের দরজায় রং করা বাবদ ৬৫ হাজার ৪৬ টাকা এবং গ্রিলে রং বাবদ ৬১হাজার ৮শ’ ২৯ টাকা খরচ দেখানো হলেও উল্লেখিত সময়ে রং এর কোন অস্তিত্ব মেলেনি। এছাড়াও ভবনে প্লাষ্টিক পেইন্ট বাবদ ঠিকাদারের মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলিত হয়।
এ ব্যাপারে টিএইচএ ডা. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ঠিকাদারের মাধ্যমে যে ভাবে কাজ করেন সেটি বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে। দরজা, জানালা স্থাপন না হলেও এক খাতের অর্থ দিয়ে অন্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আরএমও ডা. মিজানুর রহমান কাজের ত্রুটি ও অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, কিছু কিছু কাজ সন্তোষজনক হওয়ায় তার প্রত্যয়ন দিয়েছি। আবার অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ কাজে কোন প্রত্যয়ন না দিলেও ঠিকাদার ও প্রকৌশলী যোগসাজসে প্রত্যয়ন ছাড়াই বিল ছাড় করিয়ে নেয়। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দের স্বাক্ষর থাকার কারণে ঠিকাদারের কাজ না দেখেই স্বাক্ষর করা হয়েছে এমন দাবি প্রকল্প কমিটির অপর সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে স্টোর কিপার মুরাদ হোসেন মোল্যা, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন, অফিস স্টাফ ওহিদুল ইসলাম ও হাফেজ আশরাফুল ইসলাম। 
অপরদিকে, দুদক খুলনার উপ-সহকারী পরিচালক নীলকমল পাল বলেন, এক খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য খাতে ব্যয়ের কোন সুযোগ নেই। এটা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু অনিয়ম ও অসংগতি পাওয়া গেছে। পূর্ণ অনুসন্ধানের মাধ্যমে সরকারি অর্থের সঠিক ক্ষতি ও আত্মসাতের পরিমাণ জানা যাবে। এ সময় অভিযানে দুদকের কোড পরিদর্শক বিজন কুমার রায় ও সহকারী পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। পরে দুদক টিম হাসপাতালের ঔষধের স্টোরের অভিযানে তাৎক্ষণিকভাবে কোন অসংগতি ধরা পড়েনি। তবে হাসপাতালে সরকারিভাবে সরবরাহ ও স্টোরে থাকলেও সেপ্টিকক্সন ইনজেকশন ভর্তিকৃত গরীব রোগী শিরোমনি গ্রামের দেলোয়ার মল্লিক (৬০) কে বাজার থেকে কিনে আনতে বাধ্য করা হয় বলে তার অভিযোগ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ