শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
Online Edition

মালয়েশিয়ার জঙ্গলে বাংলাদেশী শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

স্টাফ রিপোর্টার : মালয়েশিয়ায় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বিতাড়নের আশঙ্কা ও নতুন করে কাজের অনুমতি পাওয়ার আশায় জঙ্গলে বাস করছেন উদ্বিগ্ন বাংলাদেশী শ্রমিকরা। তারা উন্নত জীবনযাপনের আশায় বাংলাদেশ থেকে সেখানে পাড়ি জমিয়েছিল। তবে এখন তারা সেখানকার জঙ্গল ও পাম ওয়েল বাগানে লুকিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মালয়সিয়াকিনিকে উদ্ধৃত করে দেশটির সংবাদমাধ্যম মালয়মেইলে বলা হয়েছে, গত বছর কোম্পানি থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর থেকে হাইওয়ের নিকট একটি পাম ওয়েল উপবনে পালিয়ে আছে ১৬ অভিবাসী শ্রমিকের একটি দল।
 এরা সবাই বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী। ওই কোম্পানিটি রাজধানী কুয়ালালামপুরের নিকটে অবস্থিত। গতকাল শুক্রবারের ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়ছে।
বাংলাদেশের বরিশাল থেকে যাওয়া আল-আমিন বলেন, ‘দেশে আমার বাড়ির গরুগুলো এর থেকে তুলনামূলক ভাল পরিবেশে আছে।’ তিনি ও অন্য বাংলাদেশী শ্রমিকরা দাবি করেছেন, শ্রমিক আন্দোলনের অংশ নেওয়ার কারণে তাদেরকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ও তাদের মালিকদের মধ্যে সমঝোতা চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর শ্রমিকদের কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করেই তাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা পালিয়ে আছে তাদেরও একই পরিণতি হতে পারে বলে শ্রমিকদের আশঙ্কা। ওই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন ওই শ্রমিকরা। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা মো. মুকছেদ আলি বলেন, “কোম্পানি কিছু শ্রমিককে তাদের ‘অপরাধের’ জন্য দণ্ড দিয়েছে”। অর্থাৎ ‘কোম্পানির নিয়ম ভঙ্গের’ জন্য তাদেরকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মান্নান মিয়া বলেন, ‘আমি কামাল চন্দ্র দাস নামে এক দালালকে ১২ হাজার রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ার মুদ্রা) দিয়েছি।’ নতুন করে কাজের অনুমতি পাওয়ার জন্য এই টাকা তিনি দেন। তবে তিনি সাংবাদিককে এ অর্থ দেওয়ার কোনও প্রমাণ বা রসিদ দেখাতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘দালালদের কারণে আমার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। কখনও মনে হয় না আমার পরিবারকে সহায়তা করতে পারব, আমি আমার জীবন নিয়েই ভীত। সারাদিন পরিশ্রম করার পর জঙ্গলে ঘুমাই।’
২০০৫ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৩২১ বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃত্যুর খরব পাওয়া গেছে। যে সংখ্যা গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। গত বছর ৭৩৬ জনের মৃত্যু খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশের মৃত্যু হয় হৃদরোগে বা স্ট্রোকে। এ শ্রমিকদের বয়স ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ