কোটি টাকার সড়ক নষ্ট করা হচ্ছে গাছের গুড়ি ফেলে
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা, ৪ অক্টোবর : নারায়ণগঞ্জ শহরের চারারগোপ থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কটি জুড়ে ছিলো খানাখন্দে ভরা। বছর জুড়েই কাদা-জলে একাকার হয়ে থাকতো সড়কটি। এমন পরিস্থিতিতে বছরের পর বছর চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো নগরবাসীকে।
এর থেকে মুক্তি পেতে কোটি টাকা খরচ করে আরসিসি ঢালাই দিয়ে সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সড়কটি উন্মুক্ত করার পর থেকে আরসিসি ঢালাই এর উপর প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে বড় বড় গাছের গুড়ি। এতে নষ্ট হচ্ছে সড়কটির স্থায়িত্ব। অল্প দিনেই সড়কটি নষ্ট হয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন নগরবাসী।
জানা যায়, এমপি সেলিম ওসমানের ডিও লেটারে সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে। নির্মাণের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিপা কন্সট্রাকশনকে। প্রথমে সড়কটি নতুন করে নির্মাণ ব্যয় ৫কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তিতে ব্যয় কমে ৪ কোটি ৩৯লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে কাজ শুরু করে চলতি বছরের মে মাসে সড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এতে করে দুর হয়েছে খানাখন্দ আর কাদা-জলের ভোগান্তি।
মাত্র ৪মাস আগে শেষ হয়েছে চারারগোপ থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কটিতে আরসিসি ঢালাই এর কাজ। কিন্তু চার মাস না পেরোতেই দেখা যাচ্ছে সড়টিতে ভয়াবহ চিত্র। কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটিতে উপর ফেলা হচ্ছে বড় বড় কাঠের গুড়ি। এতে নষ্ট হচ্ছে সড়কটির স্থায়িত্ব।
গত বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায় এমেন চিত্র। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চারারগোপ ঘাটে ভিড়েছে বড় বড় গাছের গুড়িবাহী ট্রলার। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করেও এই জায়গায় গাছের গুড়ি আনা হয়েছে। এসব গাছের গুড়ি ট্রলার থেকে নামিয়ে শ্রমিকরা কাঁধে করে নিয়ে সড়কের উপরে সজোরে ফেলছে। একই ভাবে ট্রাকের উপর থেকেও সড়কের উপরে ফেলাছে গাছের গুড়ি। আর এতে করে জায়গা মাত্র চার মাসের ব্যবধানেই সড়কের বিভিন্ন অংশে চির ধরতে শুরু করেছে। এতে করে সড়কটি অল্প দিনেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাপ তৈরী হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিপা কন্সট্রাকশনের পরিচালক রাসেল আহমেদ বলেন, যে কোনো কাজের জন্য আমাদেরকে ৬ মাসের সময় দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যেই চলতি বছরের মে মাসে আমরা কাজ শেষ করেছি। এখন সড়কটি সবার জন্য উন্মুক্ত আছে।
সড়কটির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী খন্দকার নাজমুল হক বলেন, যে কোনো জিনিসের উপর যদি প্রতিনিয়ত ভারি জিনিস ফেলা হয় তাহলে সেটি নষ্ট হবে। এই সড়কের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। সড়কের উপর কাঠের গুড়ি ফেলাতে সড়কের স্থায়ীত্ব নষ্ট হচ্ছে। এটা করা একেবারে উচিৎ না। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি লোক পাঠিয়ে এটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করব।
এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম এহতেশামূল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।