রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

নিরাপত্তা হেফাজতে শিক্ষক হত্যায় সুদানে ২৯ গোয়েন্দা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড

৩১ ডিসেম্বর, রয়টার্স : নিরাপত্তা হেফাজতে আন্দোলনকারী এক শিক্ষককে পিটিয়ে মেরে ফেলার দায়ে ২৯ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সুদানের একটি আদালত।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের সময় ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষক আহমেদ আল-খায়েরকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

সোমবার আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত ওই ২৯ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকরের আদেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা।

বশিরবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বিক্ষোভকারী গোষ্ঠীটি এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে।

তিন দশক ক্ষমতায় থাকা বশির চলতি বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন। তার আগে ও পরের কয়েক মাসে আন্দোলনকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়ন ও নির্যাতন নিয়ে হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে সোমবারই প্রথম কোনো মামলার রায় হল।

গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তাদের ওপর কেমন সাজা হয়, সুদানের অন্তর্র্বতীকালীন সরকার বশিরের ক্ষমতাচিহ্ন মুছে ফেলতে কতটা ইচ্ছুক, তারা নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে চটাতে চায় কিনা, রায়ের আগে তা নিয়েও জনমনে বেশ উদ্বেগ ছিল।  

ওমদুরমানে আদালত ভবনের বাইরে কয়েকশ মানুষ রায় শুনতে জড়ো হয়েছিলেন। তাদের অনেকের হাতেই ছিল জাতীয় পতাকা ও খায়েরের ছবি।

“এটা বিচারব্যবস্থার বিজয়ের দিন, সমগ্র সুদানবাসী এবং বিপ্লবের জন্য জয়,” রায়ে সন্তোষ জানিয়ে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন খায়েরের ভাই সাদ।

শিক্ষক হত্যায় অভিযুক্তদের মধ্যে আরও ১৩ জনকে আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে; চারজনকে খালাস।

যে ২৯ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের ২৭ জনই প্র্বূাঞ্চলীয় কাসালা রাজ্যের রাজধানী কাসালার; বাকি দুজন একই রাজ্যের খাসম আল-কিরবা শহরের, জানিয়েছেন এক আইনজীবী।

খাসম আল-কিরবা শহরেই খায়েরকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। 

বশিরের শাসনমালবিরোধী ১৬ সপ্তাহের আন্দোলনে শিক্ষক খায়ের হত্যাকা-ের ঘটনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রয়টার্স। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা প্রথমে খায়েরের মৃত্যু বিষক্রিয়ায় হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। পরে রাষ্ট্রীয় তদন্তে আন্দোলনকারী এ শিক্ষক মারধরের আঘাতে মারা যান বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে থাকা কয়েকশ মানুষ উল্লাস করতে করতে রাস্তায় নেমে আসে; তাদের সরাতে নিরাপত্তা রক্ষীদের কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। কাঁদানে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় হাঁপানিতে ভোগা এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে বশিরবিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের একটি কমিটি নিশ্চিত করেছে।     

বশিরবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সুদানিজ প্রফেশনাল অ্যাসোসিয়েশন (এসপিও) রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, আদালতের এ সিদ্ধান্ত বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে ভূমিকা রাখবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ