মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
Online Edition

সহিংসতায় উত্তপ্ত নির্বাচনী মাঠ

মিয়া হোসেন : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি। তবু নির্বাচনী মাঠে সহিংসতা, সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। আজ রোববার চতুর্থ ধাপে ইউপি ভোট হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এ ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হয়েছে। এই উত্তপ্ত মাঠেই আজ ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। শুক্রবার রাতে নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে। সহিংসতার আশঙ্কায় এদিন সকাল থেকে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য মোতায়েন সত্ত্বেও শুক্রবার ভোলার পশ্চিম ইলিশা ও রাজাপুরে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে নওগাঁর মহাদেবপুর, ময়মনসিংহের গৌরীপুর, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি সহিংসতায় মারা গেছেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে ৪৪২টি সহিংস ঘটনায় ৮৭ জন মারা গেছেন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আজকে চতুর্থ ধাপে দেশের ৫৮ জেলার ১১৮ উপজেলার ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভোট ছাড়াই ২৯৫ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ৪৮ জন, সংরক্ষিত সদস্য ১১২ জন ও সাধারণ সদস্যা ১৩৫ জন। সহিংসতার আশঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী ২১ জেলার ৩৮ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া একইদিন পাবনার আটঘরিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা ও কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভায়ও ভোট হবে।
ইসি জানিয়েছে, চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন হাজার ৮১৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৩০ হাজার ১০৬ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে নয় হাজার ৫১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি-জাপাসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। তবে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলটির নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। এ ধাপে ৮৩৮ ইউপির মধ্যে ৮০০ ইউপিতে কাগজের ব্যালট এবং ৩৮টিতে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ভোটকেন্দ্র ৯২২৪টি; ভোটকক্ষ ৪৯,৮৩২টি।
জানা গেছে, নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। শুক্রবারও নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। ইউপি ভোটকে কেন্দ্র করে বেশকিছু নির্বাচনি এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। যদিও নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সব প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কায় ২১ জেলার ৩৮ উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদার ভিত্তিতে এসব সদস্য মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে ইসি। জেলাগুলো হলো-বরিশাল, নাটোর, লালমনিরহাট, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, গাইবান্ধা, বান্দরবান, কুড়িগ্রাম, মুন্সীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ। আরও রয়েছে-চাঁদপুর, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও যশোর।
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ইউপিতে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর, দ্বিতীয় ধাপে ১১ নভেম্বর এবং তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ভোট হয়।
চতুর্থ ধাপে রোববার ৮৩৮ ইউপিতে ভোট হবে। এবার পঞ্চম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ৫ জানুয়ারি এবং ৬ষ্ঠ ধাপে ৩১ জানুয়ারি ২১৯ ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ