রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

ইউক্রেন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র

২৮ জানুয়ারি, আল জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি: ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি উন্মুক্ত বৈঠক ডেকেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। এ বিষয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে রাশিয়ার আচরণকে ‘হুমকিমূলক’ বলে অভিহিত করেন তিনি। সম্প্রতি ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা মোতায়েন নিয়ে মস্কোর সঙ্গে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর উত্তেজনা চলছে। কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, ইউক্রেনে সামরিক হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করছে মস্কো। তবে মস্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক ডাকার কথা জানাল যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা তার বিবৃতিতে বলেন, ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখের বেশি রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইউক্রেনকে নিশানা করে অন্যান্য অস্থিতিশীল কর্মকা- চালাচ্ছে রাশিয়া। এসব কর্মকা-ের মাধ্যমে দেশটি আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি স্পষ্ট হুমকি তৈরি করছে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা বলেছেন, ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদকে চলমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায়, তবে আন্তর্জাতিকভাবে করণীয় কী হতে পারে, তা নির্ধারণ করতে হবে। লিন্ডা বলেন, বসে বসে দেখা ও অপেক্ষার সময় এটি নয়। এখন নিরাপত্তা পরিষদের পূর্ণ মনোযোগ দরকার। সোমবার তারা খোলামেলা ও ফলপ্রসূ আলোচনার আশা করছেন।

এদিকে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেইন নিয়ে চলমান অচলাবস্থায় তাদের প্রধান নিরাপত্তা উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্র আমলে নিতে রাজি নয় এটি পরিষ্কার হয়ে গেলেও দুই পক্ষই আরও আলোচনার জন্য তাদের দরজা খোলা রেখেছে। রাশিয়া ইউক্রেইন সীমান্তের কাছে সেনা সমাবেশ করার পর দেশটিতে মস্কো আগ্রাসন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন আশংকায় শঙ্কিত হয়ে ওঠে পশ্চিমা শক্তিগুলো। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে নতুন করে প্রতিরক্ষা সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এরপর ইউরোপে স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে সাজানোর দাবি জানায় রাশিয়া। গত বুধবার এসব দাবির লিখিত জবাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো। এর প্রতিক্রিয়ায় গত বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, পর্যালোচনার জন্য মস্কোর সময় প্রয়োজন এবং সিদ্ধান্ত নিতে তারা তাড়াহুড়া করবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো তাদের বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রধান দাবিগুলোকে অগ্রহণযোগ্য বলে বর্ণনা করায় এক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার তেমন একটা সুযোগ নেই।

পেশকভ বলেন, “আমাদের সহকর্মীরা (যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো) যা বলেছেন তার ভিত্তিতে এটি পুরোপুরি পরিষ্কার যে ওইসব খসড়া নথিতে বর্ণিত প্রধান বিভাগগুলোতে আমাদের চিন্তা আমলে নেওয়া হয়েছে অথবা আমাদের উদ্বেগ আমলে নেওয়ার কোনো সদিচ্ছা দেখানো হয়েছে, এমনটি আমরা বলতে পারবো না; কিন্তু আমরা আমাদের মূল্যায়ন নিয়ে তাড়াহুড়া করবো না।”

ক্রেমলিনের এই সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় দেখা যাচ্ছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও নেটোর জবাব ফেলে দিচ্ছে না বা কূটনীতির জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে না।   ওয়াশিংটন বলেছে, রাশিয়া তাদের জবাব পড়ে দেখবে এবং আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবে এমনটি আশা করছে তারা ও তাদের মিত্ররা।

ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গতকাল শুক্রবার টেলিফোনে আলাপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর এই আলাপের পরই বাইডেন জানান, রাশিয়া ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে আক্রমণ করবে।

এর জবাবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, যুদ্ধ করার কোনো ইচ্ছাই রাশিয়ার নেই। তবে সঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন, রাশিয়ার জন্য হুমকি এমন কিছুতে তারা চুপ করে থাকবেন না।  রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে রাশিয়া যে দাবি করেছে, সেটির জবাব বৃহস্পতিবার দিয়েছে ন্যাটো। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আসল দাবিই মেনে নেওয়া হয়নি।  রাশিয়ার দাবি হলো ন্যাটো ইউক্রেনকে কখনো তাদের সদস্য বানাবে না। সঙ্গে পূর্ব ইউরোপে তাদের কার্যক্রম কমিয়ে দেবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ