মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪
Online Edition

রোজাকে টার্গেট করে এখনই দাম বাড়ছে বেশকিছু পণ্যের

স্টাফ রিপোর্টার : পবিত্র রমযান শুরু হতে এখনো বাকী আরো দুই মাস। রোযার সময় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হয়। যার কারণে তখন জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে পারে না ব্যবসায়ীরা। আর এজন্য এখন থেকেই বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে তারা। ইতোমধ্যে নতুনভাবে ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মসুর ডাল (মোটা দানা) কেজিতে বেড়েছে ৩-৪ টাকা। আর ছোট দানা (নেপালি) বেড়েছে কেজিতে ৫-৬ টাকা। এছাড়া প্যাকেট আটা ও প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, সব ধরনের সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫-৮ টাকা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাম অয়েলের দামও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। যদিও বানিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির আগে সয়াবিন তেলের দাম বাড়বে না। তবু সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন আসা বোতলের এক লিটার তেলের গায়ের (লেভেলে লেখা) মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫-১৬৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। আর পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৮৫-৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।
অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ১৫৫-১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা, তা আগে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।
গত ১৯ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ দিনে ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর ভোজ্যতেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী সেদিন বলেন, ব্যবসায়ীরা নিজেরা নিজেরা কিছু দাম বাড়িয়েছিল, আমাদের না জানিয়ে। সেটাও তারা (ব্যবসায়ী) বলেছে কনসিডার করবে। তবে আন্তর্জাতিক মার্কেট, ডিউটি স্ট্রাকচার সব দেখে ১৫ দিন পর বসে সিদ্ধান্ত নেবো। সামনে রমজান, রোজার ঈদও আছে। সেজন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন স্বাভাবিকভাবে এলসি ওপেন করে।
এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার কথা উল্লেখ করে নতুন দাম কার্যকরের দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরে সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ট্যারিফ কমিশনে পাঠায় মন্ত্রণালয়।
এদিকে আবারো দাম বেড়েছে আটা ও ময়দার। ৫০ টাকা কেজি ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি দরে। ৪২ টাকা কেজি প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকা কেজি দরে। ডিম, মাছ, পেঁয়াজ, আলুর দাম আগের মতোই চড়া রয়েছে।
এদিকে চালের দাম আবারও বেড়েছে। মাঝারি চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৫৬ টাকা দরে। শুক্রবার সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।
এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকার মতো।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬০-১৬৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০-১৭৫ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০-২৮০ টাকা।
এদিকে, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা।
সবজির বাজারে দেখা গেছে, গাজর ও পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকা। ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। শাল গমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে  ৪০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা।
মাছ বাজারে দেখা গেছে, শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। তবে গোশতের দাম  বাড়েনি। গরুর গোশতের কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা আর খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ