উত্তর কোরিয়াকে আর দোষ দিয়ে লাভ কী
যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা হচ্ছে, জোর তৎপরতাও চলছে। তবে এ সবের মধ্য দিয়ে যে বিষয়টি উঠে আসছে, তা মোটেও সুখপ্রদ নয়। বরং তা মানব মর্যাদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, শন্তিময় বিশ^ গড়ার অনুকূলেও নয়। আবার শক্তিমানদের দম্ভ ও কূটচালের তরঙ্গই লক্ষ্য করা গেল। রয়টার্স ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে জিম্মি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিষয়ে হামাস ও ইসরাইলের শেষ মুহূর্তের দর কষাকষি চলছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী আবদুল রহমান আল থানি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার। গত রোববার আবদুল রহমান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের সঙ্গে গাজার সম্ভাব্য যুদ্ধ বিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরাইলের হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে মনে করেন তিনি । তবে আবদুল রহমান বলেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। কারণ, সম্ভাব্য চুক্তির পথে চ্যালেঞ্জ ‘খুবই সামান্য’।
এদিকে শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামাী কয়েকদিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ছয় পৃষ্ঠার ওই সাময়িক সমঝোতা চুক্তির রূপরেখার ব্যাপারে জানেন, এমন ব্যক্তিরা সংবাদ মাধ্যমটিকে এ কথা নিশ্চিত করেছেন। গাজার উত্তরাঞ্চলে দু’টি স্কুলে বিমান হামলার পর ইসলাইল যখন দক্ষিণাঞ্চলে হামাস সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযানের পরিসর বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলো। ওয়াশিংন পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সমঝোতার আওতায় সব পক্ষকে কমপক্ষে পাঁচদিনের জন্য যুদ্ধ স্থগিত করতে হবে। এ সময় প্রতি ২৪ ঘণ্টা পরপর ৫০ জন বা তার বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালিয়ে হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে বলে দাবি করে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। তবে শনিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘জিম্মিদের নিয়ে অনেক অপ্রমাণিত গুজব, অনেক ভুল প্রতিবেদন জড়িয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। তবে আমি অঙ্গীকার করছি, যখন কিছু বলার থাকবে, আমি আপনাদের জানাবো?।’
ওয়াশিংটন পোস্ট-এর প্রতিবেদনে সাময়িক সমঝোতা চুক্তির ব্যাপারে যা বলা হয়েছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তা মেনে নিতে নারাজ। তিনি বিষয়টিকে ‘অপ্রমাণিত গুজব’ হিসেবে অভিহিত করতে চেয়েছেন। মাত্র পাঁচদিনের যুদ্ধবিরতিকেও তিনি খুবই মহার্ঘ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে চান। তাহলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হবে কবে? মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপনে যেতে পারবে কখন? এ কেমন সভ্যতা? যেখানে স্বাভাবিক জীবন-যাপনের কোনো গ্যারান্টি নেই। যাদের হাতে মারণাস্ত্র আছে, নিষ্ঠুর সেনাবাহিনী আছে, তারাই তো এখন পৃথিবীর শাসক। তাহলে অন্যরাও কি তাদেরই অনুসরণ করবে? এমন বাস্তবতায় উত্তর কোরিয়াকে আর দোষ দিয়ে লাভ কী? এ বিষয়ে পশ্চিমা বলয়ের কোনো বক্তব্য আছে কি?