বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় সবার শীর্ষে ঢাকা
সংগ্রাম অনলাইন: ঈদের ছুটি শেষ। ঢাকায় ফিরছে মানুষ। তবে ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসেই ভয়াবহ দূষণের কবলে মেগাসিটি ঢাকা। বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় আজ সোমবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী। এদিন সকাল ১০টা ১০ মিনিটে বায়ুমানের সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের মান ছিল ১৯৭ স্কোর। এই স্কোর নিয়ে শহরটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়।
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি। এ শহরের স্কোরও ছিল ১৯৭। এছাড়া ১৭২ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নেপালের কাঠমান্ডু এবং ১৬৬ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে পাকিস্তানের লাহোর।
স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
উল্লেখ্য, কখনো কখনো বিশ্বের মধ্যে বায়ুদূষণের শীর্ষে চলে আসে রাজধানী ঢাকা। এই দূষণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে শিশুদের। রক্ষা পাচ্ছেন না অন্তঃসত্ত্বা নারী ও গর্ভের শিশুও। জন্মের আগেই নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছে শিশুরা।
গবেষকরা বলছেন, চলমান মেগা প্রকল্প, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণাধীন স্থাপনা, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ইটভাটা, বসতবাড়ি ও কলকারখানার বর্জ্যসহ নানাবিধ কারণে ঢাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। এসবের ফলে রাজধানীর বাতাসে যুক্ত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সিসা, নাইট্রোজেন, হাইড্রোকার্বন, বেনজিন, সালফার ও ফটোকেমিক্যাল অক্সিডেন্টস। জ্বালানির দহন, বনভূমি উজাড় প্রভূতি কারণে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ঢাকার এমন বায়ু স্বাস্থ্যের ওপর নানান নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ যেমন নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছেন নগরবাসী।
ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বের অন্যতম দূষিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রতি পাঁচ বছরেরও বেশি আয়ু কমতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।