সোমবার ২০ মে ২০২৪
Online Edition

মুফতি ওয়াক্কাস গ্রেফতার ॥ মুক্তির দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মুফতি মো. ওযাক্কাসকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার আবুল হোটেলের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামীর তা-বের ঘটনায় শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় মুফতি ওয়াক্কাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলেও তিনি জানান।

তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌধুরীপাড়ার শামসুল উলুম মাদরাসায় অনুষ্ঠিত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড) জরুরি মিটিং চলাকালীন সময় সেখান থেকে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের একটি টিম ওয়াক্কাসকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।

মুফতি ওয়াক্কাস বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা। তার দল জমিয়তে ওলামা ইসলাম। মুফতি ওয়াক্কাস এইচএম এরশাদের সরকারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সংসদ সদস্যও ছিলেন।

মতিঝিলে ৫ মে হেফাজতের ভাঙচুরের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে মুফতি ওয়াক্কাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ৫ মে’র সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর তিন থানায় ১৬ মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলা তিনটি। এসব মামলায় প্রায় ৪৯৫ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও আসামী করা হয়েছে অর্ধলাখ ব্যক্তিকে। হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি আসামীর তালিকায় আছেন বিরোধী দলীয় জোটের অনেক শীর্ষ নেতাও।

ঢাকা অবরোধ ও শাপলা চত্বরে সমাবেশ কর্মসূচি পালনের নামে হেফাজতে ইসলাম ও কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা নজিরবিহীন তা-ব চালায় মতিঝিল ও পল্টন এলাকায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নগরজীবনে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করার পরিপ্রেক্ষিতে মতিঝিল, পল্টন ও রমনা থানায় মামলাগুলো দায়ের হয় বলে জানায় পুলিশ।

মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন

ওয়াক্কাসকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করেছে হেফাজতের আমীর শাহ আহমদ শফী ও মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা বাড়াবাড়ি না করার জন্য সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছি। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার-হয়রানি করে ঈমানী আন্দোলন বানচাল করার ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না।”

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের মুক্তির দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ের নেতারা। তাকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তির দাবি জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘দুপুর ২টায় চৌধুরীপাড়াস্থ শামসুল উলুম মাদরাসায় অনুষ্ঠিত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড) জরুরি মিটিং চলাকালীন সময় সেখান থেকে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের একটি টিম তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।’

তারা আরো বলেন, ‘মুফতি ওয়াক্কাসকে অবিলম্বে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনসহ যে কোনো কঠিন কর্মসূচি হাতে নেয়া হবে। আলেম উলামাদেরকে গ্রেফতার, নির্যাতন-নিপীড়ন করে কেউ ঈমানদার মুসলমানের এই দেশে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। মুফতি ওয়াক্কাসকে গ্রেফতার করে সরকার নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করেছে।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন জমিয়তের সভাপতি আল্লামা শায়খ আব্দুল মোমিন, নির্বাহী সভাপতি আল্লামা মোস্তফা আজাদ, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা জহীরুল হক ভূঁইয়া, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, কারী আব্দুল খালিক আসআদী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা মহিউদ্দীন ইকরাম, মুফতি রেজাউল করীম, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মুফতি রেদওয়ানুল বারী সিরাজী, মাওলানা সফি উল্লাহ মাসউদ, তোফায়েল গাজালি প্রমুখ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ