শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

বাসন্তি চাকমা’র নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবি

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয় -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের উপজাতি কোটায় এমপি বাসন্তি চাকমা’র নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকারকে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকারকে দেওয়া এক স্মারকলিপিতে তারা এই দাবি জানায়।
উল্লেখ্য যে, জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালী এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক, উগ্র সাম্প্রদায়িক তথ্য সম্বলিত বক্তব্যে মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে চরম আঘাতসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টির দায়ে সংসদ থেকে বহিষ্কার, তার দেয়া বক্তব্য সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেয়া এবং জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবিতে গত মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনেও তারা  একই দাবি জানায। স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়া, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শেখ আহাম্মদ রাজু, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আবদুল হামিদ রানা, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রপরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাহাদাৎ ফরাজি সাকিব প্রমুখ।
আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়া বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের  তিন জেলা থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনিত এমপি বাসন্তি চাকমা তার বক্তব্যে উগ্র সাম্প্রদায়িকতার উসকানি দিয়েছেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করেছে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে ডাহা মিথ্যাচার ও বিষোধগার করে তাদের অবদানকে কালিমালেপন করেছেন এবং ৩০ হাজারের বেশী বাঙালির খুনী শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের ভাই বলে সম্বোধন করে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে উৎসাহীত করেছে। মুখোশধারী এ সন্ত্রাসীনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে কলংকিত করেছেন। এ জন্যে তাকে দল থেকে বহিষ্কার, সংসদ থেকে পদত্যাগ, নইলে সংসদ থেকে বহিষ্কার এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে জাতীয় সংসদে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা ও তার দেয়া মিথ্যা বক্তব্য  সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেয়া দিতে হবে। অন্যথায় হরতালসহ কঠিন কর্মসূচীতে বাধ্য করার হুশিঁয়ারী উচ্চারণ করা হয়।
এদিকে, বাসন্তী চাকমা ক্ষমা না চাইলে পাহাড়ে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা : সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের নিয়ে মহান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমার দেয়া বক্তব্যকে ঘিরে পাহাড় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাঙালি সংগঠনগুলো বাসন্তী চাকমাকে উগ্র-সাম্প্রদায়িক আখ্যায়িত করে ও তার বক্তব্যকে অসাংবিধানিক মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও একটি বিশেষ মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রের অংশ দাবি করে তা প্রত্যাহার, ক্ষমা প্রার্থনা ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের চেয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়া, বাসন্তী চাকমাকে পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের নিয়ে সংসদে দেয়া মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও তার অপসারণ করা না হলে আগামীতে আরও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা  হবে।
স্মারকলিপিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূইঁয়া বলেন, গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা সংসদে নির্ধারিত স্বাগত বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত শতকরা ৫১ শতাংশ বাঙালি সম্প্রদায় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপবাদমূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট কল্পকাহিনি তুলে ধরেন। তার বক্তব্যের মূল অংশ ছিল উগ্র-সাম্প্রদায়িক। ১৯৯৬ সালের ১ মে নিয়ে সংসদে বাসন্তী চাকমা যে বক্তব্য রাখেন তা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার কথার কোনো ভিত্তি নেই। সেদিন জেলার পানছড়িতে এরকম কোনো ঘটনায় ঘটেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।
তিনি বলেন, অবিলম্বে বাসন্তী চাকমা কর্তৃক সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙালিদের নিয়ে সংসদে দেয়া মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে বলেও জানান। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ