শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা উচিৎ

খুলনা অফিস : খুলনায় ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, মরণ ফাঁদ ফারাক্কা বাঁধ চালুর ফলে বাংলাদেশের প্রায় ৮ কোটি মানুষ চরমতম সংকটের মুখে পড়েছে। উজানের পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করায় ভয়াবহ খরায় কখনো ফসল হানি ঘটছে, আবার কখনো বাঁধের মুখ খুলে দেয়ায় বন্যায় ডুবছে দেশ। ১৯৭৬ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা লংমার্চের ডাক দিয়ে জনগণকে আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। ভাসানী ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন, ৪০ বছর পরে বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে। আজ সে কথা সত্য হতে চলেছে। শত শত নদ-নদী মারা গেছে। ভারত পানি নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের নীলনকশায় উজানের পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় সমুদ্রের লবণাক্ত পানি গ্রাস করছে সুন্দরবনকে। ভারত জানে এ দেশ পানির ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে তারা এখন পানি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তিস্তা চুক্তি করতে ভারতের নেতৃবৃন্দের তালবাহানার তীব্র সমালোচনা করেন বক্তারা। ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে সরকার সচেতন না হলে এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ না হলে আমাদের সংকট দূর হবে না বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। পানি অধিকার আদায়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা উচিৎ বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে খুলনায় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্মৃতি পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট বজলুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম, কেসিসির মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট গাজী আব্দুল বারী, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ অধ্যক্ষ মাজহারুল হান্নান, বিএনপি নেতা শেখ মোশারফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, সাহিত্য গবেষক প্রফেসর আব্দুল মান্নান, বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মালেক, বিজেপির মহানগর সভাপতি এডভোকেট লতিফুর রহমান লাবু, এডভোকেট মঞ্জুর উল আলম, এডভোকেট ড. জাকির হোসেন, ডা. শওকত আলী লস্কর এবং সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম। অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পষিদের সদস্য সচিব জালাল শরীফ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা শফিকুল ইসলাম।
দুর্নীতি প্রতিরোধে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে -দুদক কমিশনার
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। শৈশব থেকেই শিশুদের মনে দুর্নীতির কুফল এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজের সুফলের ধারনা দিতে পরিবার ও বিদ্যালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি গতকাল বুধবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
দুদক কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুর্নীতিমুক্ত, সুখী ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। তাঁর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দুদক জনগণকে সাথে নিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছে। এ লক্ষ্যে বর্তমানে দুদককে  ঢেলে সাজানো হয়েছে। কমিশনের কাজের মান বাড়াতে কর্মকর্তাদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতির অনুসন্ধান বাড়াতে গোয়েন্দা সেল গঠনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিবাজরা কখনই জনগণের চেয়ে শক্তিশালী নয়। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কমিয়ে আনতে কর্তা ব্যক্তির সদিচ্ছাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্নীতিম্ক্তু বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি আহবান জানান।
এসময় দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা উপজেলা পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য উপজেলা পরিষদে কমিটির জন্য একটি কক্ষের ব্যবস্থা করা, সারা দেশের সদস্যদের নিয়ে বাৎসরিক সমাবেশ করা, ইউনিয়ন কমিটি কার্যকর করা, উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত গণশুনানীর আয়োজন করা, গণশুনানীতে সহযোগিতা করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানসহ রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলগুলোতে দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমে অšতর্ভুক্ত করার পরামর্শ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) নিশ্চিšত কুমার পোদ্দার। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান, এডিশনাল ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান বিপিএম ও দুদক পরিচালক (প্রতিরোধ) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা দুদকের পরিচালক  ড. মো. আবুল হাসান।
পরে দুদক কমিশনার শ্রেষ্ঠ জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মোট ৮০টি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ