শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

রাজশাহীতে চালের বাজারে পাগলা ঘোড়া সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

রাজশাহী : চালের বাজারে দফায় দফায় দাম বাড়ছে রাজশাহীর বাজারে -সংগ্রাম

বিশেষ প্রতিনিধি, রাজশাহী : ঊর্ধ্বমূল্যের পাগলা ঘোড়া ছুটে চলেছে রাজশাহীর চালের বাজারে। দফায় দফায় চালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম। বর্তমান বাজারে মোটা চালই ৫০ টাকা, মাঝারি ৬০ টাকা আর চিকন চাল ৭০ টাকা উঠেছে।
গতকাল পর্যন্ত খবর নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলাগুলোতে চালের দাম ক্রমাগত হারে বেড়েই চলেছে। আর এতে করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। ঈদের পর থেকে শুল্ক কমানোর পরও বাড়তেই আছে। মোটা, মাঝারি ও চিকন চালে প্রতি কেজিতে মানভেদে কমপক্ষে দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। অথচ এর আগে ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, শুল্ক কমলে চালের দামও কমবে। কিন্তু কথার সাথে কাজের কোন মিল নেই। চালের মওজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েও সুফল মিলছে না। গত সোমবার বিকেলে রাজশাহীর বিসিক এলাকায় চাল ৫ হাজার বস্তা মজুদের দায়ে দু’জন কে আটক করে জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সূত্রে জানা গেছে, সরকার গত এক মাসের ব্যবধানে চালে আমদানি শুল্ক ২৬ শতাংশ কমিয়ে মাত্র ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। অথচ এর ইতিবাচক প্রভাব এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলো ঘুরে জানা গেছে, ঈদের দু’সপ্তাহ আগেও বাজারে মোটা চাল কেজি প্রতি (ইরি/স্বর্ণা) ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা, বিআর-আটাশ চালের কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৪ টাকা, মিনিকেট চাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। ব্যবসায়িরা জানান, সরকার মূলত অনেক বেশি দামে চাল ক্রয় করার কারণে বেসরকারি পর্যায়ের আমদানিকারকদের বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। তাদেরকেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাছাড়া সরকার চালের ওপর শুল্ক কমানোর সংবাদে সাপ্লাইয়ারগণ বুকিং রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে আমদানিকারকগণ শুল্ক কমানোর সুবিধা পাচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত বোরোতে চালের উৎপাদন ২০ লাখ টন কম হয়েছে। চালের আমদানি বাড়াতে গত ২০ জুন চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে; কিন্তু এরপরও বাজারে তেমন প্রভাব না পড়ায় গত ১৭ আগস্ট আমদানি শুল্ক আবার কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়।
বাড়ছে সবজির দামও : এদিকে চালের দামের সাথে সাখে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। যে কোন সময়ের চেয়ে সবজি প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর স্টেশন বাজারে চাল কিনতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, এ বছর যেভাবে সময়ে অসময়ে চালের দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মত গরীব মানুষের জন্য খুব সমস্যা হচ্ছে। কারণ যেভাবে চালসহ সবজির দাম বাড়ছে সেভাবে তো দিনমজুরদের আয় বাড়ে না। আরেক ব্যক্তি বলেন, তাদের মত নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য কি যে সমস্যা তা বলে বোঝানো যাবে না। সাহেব বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে এবং ভারতীয় রসুনের দাম ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে । করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটল ৩৫-৪০ টাকা, কচুরমুখী ২০, ঝিঙ্গা ২৫, পেঁপে ২০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা, কাকরল ৪০ টাকা, কচুর লতি ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ২৫/৩০ টাকা, চিচিংগা ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা। ঈদের আগ থেকে পেয়াজ প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং বিদেশী ৩০ টাকায়। কাঁচা মরিচের দাম আবারও বেড়ে ১০০ টাকায় ঠেকেছে। আলুর দাম ২০-২৫ টাকা কেজি দরে।
বাঘায় যুবকের লাশ
উদ্ধার ॥ মোহনপুরে
মিললো পরিচয়
বাঘা ও মোহনপুর (রাজশাহী) সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাঘায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে মোহনপুরে উদ্ধাকৃত এক লাশের পরিচয় মিলেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বাঘা উপজেলার তেথুলিয়া মাউদপাড়া জামে মসজিদ ও গোরস্থানের মাঝখানের নালা থেকে রাকিব হোসেন (৩৬) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার মাউদপাড়া গ্রামের আমান উদ্দীনের ছেলে বলে জানা গেছে। পুলিশ জানায়, স্থানীয় চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিকের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছ ধরার জাল হাতে অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। রাকিবের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ আরো জানায়, গত রোববার সন্ধ্যায় মাছ ধরার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় রাকিব। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। লাশটি উদ্ধারের পর কপালের কাটা দাগ দেখে রাকিবকে সনাক্ত করে তার চাচা কামাল ও ভাই রাহেবুল। রাকিব মৃগী রোগ আক্রান্ত ছিল বলে জানান তারা।
এদিকে মোহনপুর উপজেলার বিল থেকে উদ্ধারকৃত অর্ধগলিত লাশের চারদিন পর পরিচয় মিলেছে। তিনি উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার নাকইল গ্রামের আবুল কাশেম আলীর ছেলে দুই সন্তানের জনক আবু বাক্কার (৩২)। তিনি বাকশিমইল গ্রামের শাহকওয়াতের মেয়েকে বিয়ে করে ঘর জামাই থাকতেন। নিহত আবু বাক্কারের বোন জানান, গত বুধবার রাত ১২টার সময় একজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে নাকইল গ্রামে মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। কিছুক্ষণ পরে ওই বন্ধুর সাথে চলে আসেন আবু বাক্কার। পরিবারসহ স্থানীয়রা জানান, সে বিভিন্ন নেশার সাথে জড়িত ছিল। এদিকে শনিবার রাতে মোহনপুর থানার পুলিশ উপজেলার সইপাড়া ভাতুড়িয়া খরখরচা বিল থেকে আবু বাক্কারের পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) মর্গে প্রেরণ করে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ